এন্টারটেইনমেন্ট করেসপনডেন্ট
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:০১
দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী বাবার সম্পত্তিতে কন্যা পুত্রের অর্ধেক ভাগ পায়। কিন্তু সামাজিক বাস্তবতায় এ অর্ধেক ভাগও নারীদের অধিকাংশ সময় ছেড়ে দিয়ে আসতে হয়। এবার এ ভাগ চাওয়ার কারণে অনেক নারী তার বাবার বাড়ির লোকেদের কাছে বিরাগভাজন হন। অনেককে ধারস্থ হতে হয় আদালতের। সম্পত্তি চাইলে ভাইরা বোনদের কটু কথা শোনাতে ছাড়েন না। তবে কিছু পরিবার আছে এর ব্যতিক্রম। তারা শুধু সঠিক ভাগই দেন না, কন্যা ও পুত্রদের মাঝে সমান ভাগ করেন। তেমনই এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন অভিনেত্রী রুনা খানের ভাই তুহিন।
এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে রুনা খান জানান, তার বাবার ২৫ কাঠার একটি জমি ছিল। সে জমি বিক্রির টাকা তার ভাই তাকে অর্ধেক বুঝিয়ে দিয়েছে। তার ভাইকে সবাই এটি করতে মানা করলেও তিনি তা শুনেননি। দেশের আইনের কথা স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি বলেছেন, ‘আমি দেশের নিয়ম মানি না।’
রুনা পোস্টে উল্লেখ করেন, তিনি যখন ইডেনে অনার্সে ভর্তি হন তখন তার ভাই ৯ম শ্রেণিতে পড়েন। পারিবারিক বাস্তবতায় রুনাকে টিউশনি করে পড়াশোনা করতে হয়েছে, সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। সংসারের পিছনে রুনার অবদান ভুলেননি তার ভাই।
জমি বিক্রির টাকা ভাগ করার সময় সবাই তুহিনকে বলেছে, তোমার সম্পত্তি এক টাকা হলে রুনার দশ টাকা। ও তোমার চেয়ে দশগুণ আয়ও করে। জবাবে তুহিন বলেছেন, রুনার আমার থেকে ১০ গুন বেশী আছে তাই অর্ধেক দিলাম, নইলে ওকে পুরাটা দিতাম।বাপের ২৫ কাঠা জমি যে ২৫ বছর আগেই বেঁচে খেতে হয়নি, তার কারণ রুনা। আব্বুর রিটায়ার করার পর কোন একটা আত্মীয়-স্বজন ১ টাকা দিয়ে সাহায্য করেনি, রুনা জীবনে ১ টা টাকা কারোর কাছে সাহায্য চায়নি, ধার করেনি। ১৮ বছর বয়স থেকে টিউশনি করে নিজে চলেছে-সংসার চালিয়েছে-আমাকে মানুষ করে! এইজন্যই তো এই জমি আছে, নইলে তো জমি কবেই বেঁচে খেতে হতো! আব্বুর জমির পুরাটা ওর ভাগ। ওর অনেক আছে তাই ওর ভাগ থেকে অর্ধেক আমি নিলাম।’
রুনা সবশেষে লেখেন, আমি যা করেছি তা এই দেশের বহু মেয়ে হয়তো পরিবারের-ভাইয়ের জন্য করে। তবে আমার ভাই যা করলো গত সপ্তাহে, তা এই দেশের কয়জন ভাই বাপের সম্পত্তি ভাগের ক্ষেত্রে বোনদের সাথে করে, তা ঠিক জানিনা। আমার থেকে শেখার তেমন কিছু না থাকলেও, আমার ভাইয়ের থেকে এদেশের ছেলেরা শিখতে পারেন।
banglanewsbdhub/এজেডএস