শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে রাবিতে পোষ্য কোটা স্থগিত – BanglaNewsBDHub.com |

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo



শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা (পোষ্য কোটা) নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের এক পোস্টের মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়।ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতিতে রবিবার ২১ সেপ্টেম্বর জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে।

এর আগে পোষ্য কোটা ইস্যুকে কেন্দ্র করে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি ও অ্যাগ্রোনোমি অ্যান্ড এগ্রিকালচার এক্সটেনশন বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল আলীম এ ঘোষণা দেন।

এদিকে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে রাত ১০টার দিকে একযোগে ১৭টি হল থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল রাত ১১টার দিকে জুবেরী ভবন থেকে উপাচার্যের বাসভবনে সামনে অবস্থান নেয়।

বিকেল থেকে চলা এই পরিস্থিতি নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি বা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেননি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব।

কর্মবিরতি ঘোষণা দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক আব্দুল আলীম বলেন, আমাদের সহকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দিনের ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন।

তিনি আরো বলেন, ‘জুবেরী ভবন একটা আবাসিক এবং ক্লাব ভবন। সেখানে আমাদের উপ-উপাচার্যসহ কয়েকজন সহকর্মীর ওপর হামলার প্রতিবাদের এবং জড়িতদের শাস্তির দাবিতে আজ পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে।

জুবেরী ভবনে শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছাত্রদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এবং ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে রবিবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ঘোষণা করছি। দাবি না মানা হলে ২২ তারিখ থেকে কর্মবিরতি চলমান থাকবে।’
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরের শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে শুক্রবার বিকেল থেকে একদল শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অনশন কর্মসূচিতে বসেন। গত ৩২ ঘণ্টা পার হলেও প্রশাসন থেকে তাদেরকে আশানুরূপ কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি। এদিকে শিক্ষকদের কর্মসূচি ঘোষণার পর পর অনশনরত শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি উপাচার্যের বাসভবনের ফটক ভাঙতে চেষ্টা করেন। এ সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন অনশনরত আরো দুই শিক্ষার্থী। তারা হলেন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী সজিবুর রহমান।আরেকজনের নাম জানা সম্ভব হয়নি। তাদের দুজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে।

এদিকে শনিবার বিকেল সোয়া ৪টা থেকে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা। রাত ১১টা পর্যন্ত সেখানেই শিক্ষার্থীরা অবস্থান করেন। ১১টার পরে সবাই মিলে স্লোগান দিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।

এসময় কর্মসূচিতে যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি হলের শিক্ষার্থীরা। নারী শিক্ষার্থীদের ৬টি হল থেকে দেখা যায় নারী শিক্ষার্থীরা নানা স্লোগানে কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন।

এসময় সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী সুপ্রভা বিনতে রফিক বলেন, ‘আমরা ১৪ জুলাইয়ের মতোই আজ আবার রাজপথে এসেছি। আমরা পোষ্যকোটার বিলুপ্তি নিয়েই ঘরে ফিরব।

এর আগে দুপুর আড়াইটায় শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে তারা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে এবং উপ-উপাচার্যের গাড়ি আটকে সেখানে টাকা ছুড়ে মারে।

পরে শিক্ষার্থীরা উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাইন উদ্দিনের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এতে তিনি সেখানে প্রবেশ করতে পারেননি। পরে তিনি প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে জুবেরী ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে পড়েন। এসময় শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কয়েকজন শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক আহত হয়েছেন।

সার্বিক বিষয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্যের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব গণমাধ্যমকে জানান, ‘আমি আগে আমার প্রোভিসি, রেজিস্টার, প্রক্টরকে ফেরত চাই তারপরেই আলোচনায় বসবো। এখন পর্যন্ত আমরা খুবই ধৈর্য্যের পরিচয় দিচ্ছি। কিন্তু এভাবে জিম্মি করে আটকে রেখে সিদ্ধান্ত হতে পারে না। আজকে তারা যা করল এটা কোনোভাবেই কাম্য না। রাকসু হবে কিনা এটা শিক্ষার্থীদের আচরণের ওপর নির্ভর করবে। তবে আমি রাকসু নির্বাচন নিয়ে খুবই সিরিয়াস।

  • কর্মবিরতি
  • ঘোষণা
  • পোষ্য কোটা
  • বিক্ষোভ
  • রাবি
  • মন্তব্য করুন

    আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।