
জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন বিলুপ্তির প্রস্তাবে তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, এটি শুধু নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের বিরুদ্ধে এক চরম পদক্ষেপ নয়; বরং এটি সংবিধান, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি এবং আন্তর্জাতিক নারী অধিকার সনদের লঙ্ঘনও। মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত সোমবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ধারাবাহিক বৈঠকে সংরক্ষিত নারী আসন বাতিলের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। এ প্রস্তাবে আমরা বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। এটি দেশের নারী আন্দোলনের ৫০ বছরের সংগ্রামের সঙ্গে চরম বিমাতা সুলভ আচরণ।
এতে বলা হয়, সুপারিশটি সংবিধানের মৌলিক চেতনা, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি, জাতিসংঘের সিডও সনদ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। অথচ নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন, নির্বাচন কমিশন, সংবিধান সংস্কার কমিশন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সংসদে নারীর সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার পক্ষে সুপারিশ করে আসছে।
বিবৃতিতে মহিলা পরিষদ উল্লেখ করে, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী হলেও জাতীয় সংসদে তাদের কার্যকর ও সমান প্রতিনিধিত্ব এখনও নিশ্চিত হয়নি। যে কোনো সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় অন্তত ৩৩ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণ গণতান্ত্রিক কাঠামোকে শক্তিশালী করে।
বিবৃতিতে ৬ দফা দাবি জানানো হয়। সেগুলো হচ্ছে- জাতীয় সংসদের সাধারণ আসনে নারী-পুরুষ উভয়ের নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে; সংরক্ষিত নারী আসন থাকতে হবে এবং তা বিলুপ্তি করা চলবে না; সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ন্যূনতম এক-তৃতীয়াংশে উন্নীত করতে হবে; মনোনয়ন প্রথা বাতিল করতে হবে; সংরক্ষিত আসনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন চালু করতে হবে এবং এই ব্যবস্থা অন্তত পরবর্তী ২ থেকে ৩ মেয়াদের জন্য বহাল রাখতে হবে।