সচিবালয়ে কর্মচারীদের বিক্ষোভ, প্রধান ফটক বন্ধ – BanglaNewsBDHub.com |

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo



‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদনের প্রতিবাদে টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষোভরত কর্মচারীরা সচিবালয়ের ভেতরে প্রধান ফটকের কাছে অবস্থান নেন। সেই ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই ফটক দিয়ে গাড়ি ঢুকতে ও বের হতে পারছে না ।

বেলা ১১টার দিকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে মিছিল নিয়ে এসে বাদামতলায় জমায়েত হন কর্মচারীরা। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুসারে তারা এই জমায়েত হন।

মিছিল শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জন্য নতুন যে ভবন করা হয়েছে সেখানে সমাবেশ করা হয়। সেখানে ঘোষণা দেওয়া হয়, বিকেল চারটা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলবে।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কর্মচারীরা বলছেন, এর মধ্যে সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ না করা হলে বিকাল ৪টায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদনের প্রতিবাদে সচিবালয়ের ভেতরে গতকাল রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ-মিছিল করেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। তাঁরা এই অধ্যাদেশকে ‘নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। তা না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, সচিবালয়ের ভেতরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে কর্মচারীরা মিছিল নিয়ে বাদামতলায় সমবেত হন। বিক্ষোভকারীরা অধ্যাদেশটি অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানান।

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের ব্যানারে চলমান এই আন্দোলনে বক্তারা বলেন, ‘নতুন এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে চার দশক আগের কিছু বিশেষ বিধান পুনঃস্থাপন করা হয়েছে, যেগুলো সরকারি চাকরিজীবীদের অধিকার হরণ করে।’

তারা আরও বলেন, ‘অধ্যাদেশটির কিছু ধারা সংবিধানবিরোধী। এটি আমাদের মৌলিক অধিকার খর্ব করে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’ অধ্যাদেশ প্রত্যাহার না হলে কর্মসূচি আরও বিস্তৃত করার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর গতকাল রোববার তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর অধ্যাদেশটিকে কালাকানুন আখ্যায়িত করে বলেন, এটি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

অধ্যাদেশে যা আছে :

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের চারটি বিষয়কে অপরাধের আওতাভুক্ত করা হয়। সেগুলো হলো সরকারি কর্মচারী যদি এমন কোনো কাজে লিপ্ত হন, যা অনানুগত্যের শামিল বা যা অন্য যেকোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে; অন্যান্য কর্মচারীর সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে ছুটি ছাড়া বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া নিজ কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন; অন্য যেকোনো কর্মচারীকে তার কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তার কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন এবং যেকোনো সরকারি কর্মচারীকে তার কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন, তাহলে তিনি অসদাচরণের দায়ে দণ্ডিত হবেন। অধ্যাদেশে এসব অপরাধের শাস্তি হিসেবে বলা হয়েছে, দোষী কর্মচারীকে নিম্নপদ বা নিম্ন বেতন গ্রেডে নামিয়ে দেওয়া, চাকরি হতে অপসারণ বা চাকরি থেকে বরখাস্ত করার দণ্ড দেওয়া যাবে।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। আর অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হলে কেন দণ্ড আরোপ করা হবে না, সে বিষয়ে আরও সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। তার ভিত্তিতে দণ্ড আরোপ করা যাবে। এভাবে দণ্ড আরোপ করা হলে দোষী কর্মচারী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। তবে রাষ্ট্রপতির দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না। আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করা যাবে।

বর্তমানে দেশে ১৫ লাখের মতো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন। আইন অনুযায়ী সবাই কর্মচারী।

  • কর্মচারী
  • বিক্ষোভ
  • সচিবালয়
  • মন্তব্য করুন

    আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।