মা হওয়া কি শুধুই গর্ভধারণের বিষয়? না কি ভালোবাসা, যত্ন আর দায়িত্বের আরেক নামও মা? এই প্রশ্নই যেন নতুন করে সামনে নিয়ে এলেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। সিনেমার পর্দায় যেমন সংবেদনশীল চরিত্রে প্রাণ দেন তিনি, বাস্তব জীবনেও ঠিক তেমনই এক মানবিক অভিপ্রায় প্রকাশ করলেন— সন্তান দত্তক নেওয়ার ইচ্ছা।
বর্তমানে ‘ডিয়ার মা’ ছবির প্রচারে ব্যস্ত জয়া। এই ছবিতেও রয়েছে একটি দত্তক সন্তান ও তার মায়ের গল্প। চরিত্রটির সঙ্গে নিজের বাস্তব জীবনের মিল খুঁজে পেয়েছেন অভিনেত্রী। কারণ, পর্দার বাইরে তিনিও মা হতে চান— তবে গর্ভধারণের মাধ্যমে নয়, দত্তক গ্রহণের মাধ্যমে।
‘আমি সন্তান দত্তক নেওয়ায় বিশ্বাসী’, এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন জয়া। জানালেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকার কোনো শিশুকে দত্তক নেওয়ার পরিকল্পনাও করেছিলেন। বোনের সঙ্গে মিলে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন তারা। কিন্তু নানা আন্তর্জাতিক নিয়ম-কানুন, কাগজপত্রের জটিলতায় সেই প্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়ে ওঠেনি।
জয়া বলেন, ‘যাদের একটি সন্তান রয়েছে, তারা দ্বিতীয় বা তৃতীয় সন্তান হিসেবে বাইরের কাউকে দত্তক নিতে পারেন। এতে সেই শিশুটিও একটি পরিবার পাবে।’ তার চোখে, মা হওয়া মানে কেবল রক্তের সম্পর্ক নয়, বরং স্নেহের বন্ধন গড়ে তোলা।
দীর্ঘ তিন দশকের কর্মজীবনে জয়া আহসান শুধু অভিনেত্রী হিসেবে নয়, একজন চিন্তাশীল ও মানবিক মানুষ হিসেবেও পরিচিত। মডেলিং থেকে নাটক, নাটক থেকে চলচ্চিত্র—দেশ এবং দেশের বাইরে, কলকাতার সিনে-জগতে তার অবস্থান এখন অনেকটাই পরিণত ও প্রভাবশালী। ২০১৩ সালে ‘আবর্ত’ ছবির মাধ্যমে কলকাতার চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু, এরপর একের পর এক আলোচিত ছবি, আর সবকটিরই কেন্দ্রে একজন শক্তিশালী নারী চরিত্র।
তবে ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন তিনি। মডেল ও অভিনেতা ফয়সাল আহসান ছিলেন তার জীবনসঙ্গী। ১৯৯৮ সালে বিয়ে হলেও ২০১১ সালে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর আর সংসার বাঁধেননি জয়া। কিন্তু মায়ের ভূমিকা নিতে যে তিনি আজও প্রস্তুত, তা যেন জানিয়ে দিলেন ‘ডিয়ার মা’-এর প্রচারের আড়ালে।