গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে এক সাঁওতাল নারীকে মারধর ও বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা করেছে নিহতের পরিবার। রাজাহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ছয়জনের নাম ও অজ্ঞাত ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রাজাহার ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো.
শনিবার সন্ধ্যায় আহত সাঁওতাল মহিলা ফিলোমেনা হাসদার ছেলে জুলিয়াস সরেন বাদী হয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন। এর আগে শুক্রবার সকালে রাজাবিরাত গ্রামে এক সাঁওতাল নারীকে মারধর করা হয়। বর্তমানে তিনি বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্বজনদের অভিযোগ, রাজাবিরাত গ্রামের পাশেই সাঁওতালদের পৈতৃক জমি রয়েছে। জমি ছিল পতিত। শুক্রবার সকালে রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম জমি ভরাট করছিলেন। হঠাৎ মাটি ভরাট দেখে কয়েকজন সাঁওতাল যুবক তাদের বাধা দেয়। ফলে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন প্রথমে নিকোলাস মুর্মু নামে এক যুবককে এবং পরে ফিলোমেনা হাসদা নামে এক সাঁওতাল মহিলাকে মারধর করে। চেয়ারম্যানের মারধরে ফিলোমেনা হাসদা তার বাম কানের পর্দা ফেটে গেলে তাকে প্রথমে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর রাত ১১টার দিকে চেয়ারম্যানের লোকজন বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মাটির ঘরের আসবাবপত্র ও টিনের চাল পুড়ে লাখ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, বাঙালি মালিকের কাছ থেকে কেনা ১৬ শতক জমি ভরাট করতে ব্রিটিশ সরেনসহ কয়েকজন বাধা দেয়। আমার লোকেরা তাদের তাড়িয়ে দিয়েছে। স্থানীয় অনেকেই দেখেছে কে আগুন দিয়েছে। কিন্তু তারা আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম জানান, মারধর ও ঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় আহত ওই নারীর ছেলে বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। মামলার আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।