
দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনের গলার ডান পাশের সব ধমনি কেটে গেছে। চাপাতির কোপে ঝাঁজরা হয়ে গেছে বুকের বাঁ পাশের পাঁজর। অন্য আরেকটি কোপ পিঠ দিয়ে ঢুকে ফুসফুস বিচ্ছিন্ন হয়ে পাঁজর ভেদ করে বেরিয়ে গেছে বুক দিয়ে। তুহিনকে হত্যার এমন নির্মমতাই উঠে এসেছে মর্গে করা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে।
গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এএনএম আল মামুন গণমাধ্যমকে জানান, সাংবাদিক তুহিনের গলা, ঘাড়, বুক, পিঠ ও হাতে গুরুতর ৯টি গভীর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। একটির চেয়ে আরেকটি আঘাত কোনোভাবেই ছোট নয়। সব আঘাতই সমান গুরুতর। সব আঘাতই গভীর।
একজন মানুষের মৃত্যুর জন্য এর যে কোনো একটি আঘাতই যথেষ্ট বলে জানান মেডিকেল কলেজটির ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মাজহারুল হক। তিনি বলেন, ৯টি আঘাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গভীর হয়েছে বুকের বাঁ পাশে। টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে বাঁ হাতের হাড়। ময়না তদন্তের এ প্রতিবেদন ইতোমধ্যে গাজীপুর মহানগর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান বিভাগীয় প্রধান।
তুহিনের মরদেহের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যেই আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেওয়ার কথা জানিয়েছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার ড. মো. নাজমুল করিম খান।
সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ড নিয়ে গত শনিবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কমিশনার বলেছেন, সংঘবদ্ধ চক্রের অপরাধের চিত্র ধারণ করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন সাংবাদিক। এ ঘটনায় আমাদের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ আছে, প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী আছেন। সব তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। তুহিনের মরদেহের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রাপ্তি সাপেক্ষে আমরা আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই আদালতে চার্জশিট দিতে পারবো। আমরা আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সাজার সংস্কৃতি নিশ্চিত করা গেলে ক্রাইম দমন করা যাবে।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) মো. রবিউল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আমরা হাতে পেয়েছি।