
ঢাকার শাহবাগ থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব আবু আলম শহীদ খানসহ চারজনের জামিন আবেদন নাকচ করেছেন আদালত। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মহানগর হাকিম আরিফুল ইসলাম শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
জামিন নামঞ্জুর হওয়া অপর তিন আসামি হলেন- আমির হোসেন সুমন, আল আমিন ও শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার। রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত কৌঁসুলি মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন জানান, আসামিপক্ষ জামিন আবেদন করলেও রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করা হয়। আদালত উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর জামিন না মঞ্জুর করেন।
মামলার প্রেক্ষাপটে জানা যায়, গত ২৮ অগাস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান নিয়ে ‘মঞ্চ ৭১’ আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটে। সেখানে একদল ব্যক্তি হট্টগোল করে, স্লোগান দিতে দিতে ভেতরে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে দেন এবং অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের লাঞ্ছিত করেন। ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা ও অতিথিদের অবরুদ্ধ রাখারও অভিযোগ রয়েছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাবেক মন্ত্রী ও মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ ১৬ জনকে আটক করে।
পুলিশ জানায়, ওই বৈঠকে আবু আলম শহীদ খানও উপস্থিত ছিলেন এবং তাঁকে ‘সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের’ সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করা হয়েছে। ৭ সেপ্টেম্বর তাঁকে বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আদালতের নথি অনুযায়ী, ‘মঞ্চ ৭১’ সংগঠনটি ৫ অগাস্ট আত্মপ্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি প্রতিরোধ ও ষড়যন্ত্র ঠেকানোর অঙ্গীকার নিয়ে। তবে আয়োজিত বৈঠকে যে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, সেটিই এই মামলার মূল কেন্দ্রবিন্দু।
আবু আলম শহীদ খানের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অতীতও উল্লেখযোগ্য। ১৯৯৬ সালে তিনি সচিবালয়ে বিএনপি বিরোধী আন্দোলনের সময় জনতার মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। ওই বছর থেকে ২০০১ পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে বিএনপি ক্ষমতায় এলে তাকে ওএসডি করা হয়। আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে পুনরায় ক্ষমতায় এলে অল্প সময়ের মধ্যে তাঁকে একাধিক পদোন্নতি দিয়ে জ্যেষ্ঠ সচিব করা হয়। ২০১৫ সালে তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে অবসরে যান।
অবসরের পর তিনি যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে কাজ করেন এবং নিয়মিত টকশোতে রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে অংশ নেন। এছাড়া ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইলেও তা পাননি।