স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:০৭ | আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:২৮
শুক্রবার নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় আয়োজিত এক দোয়া-মাহফিলে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী
ঢাকা: সামনে মধ্যপন্থী রাজনীতি বিপদে পড়তে পারে- বলে আশঙ্কা করছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় আয়োজিত এক দোয়া-মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন। পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে এ দোয়া-মাহফিল আয়োজন করে বিএনপি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘‘স্থানীয় নির্বাচন আগে, নাকি সংসদ নির্বাচন আগে- এটা যারাই বলছে বা যাকে দিয়ে বলাচ্ছে, এতে সামনে সেন্টারিস্ট রাজনীতি (মধ্যপন্থা রাজনীতি) বিপদে পড়তে যাচ্ছে কি না, এটার একটা শঙ্কা আমরা টের পাচ্ছি।’’
তিনি বলেন, ‘‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একজন ব্যক্তি। তিনিও শেখ হাসিনা দ্বারা নির্যাতিত। তিনি ন্যায়সঙ্গত কাজ করবেন। তার নেতৃত্বে অন্তর্র্বতী সরকার একটি সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন এবং গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তি বিকাশিত হবে। দেশে অনেক রাজনৈতিক দল আছে, রাজনীতিবিদ আছে। গণতান্ত্রিক পন্থায় তারা ক্ষমতায় আসবে। এই ব্যবস্থাটাই আগে করুক। যারাই ক্ষমতায় আসুক, তাদের মাধ্যমেই দেশ চলবে, স্থানীয় নির্বাচন হবে এবং অন্যান্য সংস্কার হবে।’’
রিজভী বলেন, ‘‘অনেক রক্তের বিনিময়ে এই জাতি স্বাধীনতা পেয়েছে। ক্ষুদ্র স্বার্থের কারণে সেই স্বাধীনতা যেন ক্ষুন্ন না হয়, সেই দিকটা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। যা দেশের জনগণের জন্য কল্যাণকর আমাদেরকে সেটাই করতে হবে। যে কারণে একাত্তরের যুদ্ধ হয়েছিল, মানুষ কিন্তু তা পায়নি। বারবার দেশের জনগণ অধিকার হারা হয়েছে। দেশ কে চালাবে, কোন রাজনীতিবিদ ক্ষমতায় আসবে, সেটা তো নির্ধারণ করবে দেশের জনগণ। সেই জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই তো এত লড়াই।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমাদের যে অর্জন, এই অর্জনের মধ্য দিয়ে সত্যিকার অর্থে যে গণতন্ত্র সেই গণতন্ত্রের জন্য কাজ করতে হবে। একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন- যে নির্বাচনে সবাই অংশগ্রহণ করবে এবং ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যাবে তাদের পছন্দ মতো প্রার্থীকে ভোট দেবে- এটা অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের একটা বড় কাজ। এই কাজটা তো তাদের দেখাতে হবে।’’
রিজভী বলেন, ‘‘সংসদ নির্বাচন একটি জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাজনীতিবিদদের কাছে ক্ষমতা থাকবে। ক্ষমতার উৎস হচ্ছে জনগণ। জনগণের কাছে সেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দিলে রাজনৈতিক শক্তি বিকশিত হবে এবং সেই রাজনৈতিক শক্তির বিকাশের মধ্য দিয়ে যত নির্বাচন আছে, সেগুলো হবে। কিন্তু বিতর্ক নিয়ে এসেছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে নাকি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগে। মাথা আগে নাকি লেজ আগে, সেটা নির্ধারণ করতে হবে। নির্ধারণ করতে হবে কোনটা চালিকা শক্তি। মাথা ঠিক থাকলে সবকিছু ঠিক থাকে’’
তিনি বলেন, ‘‘রাজনীতিবিদদের বিশ্বাস না করা বিরাজনীতিকরণ। এই বিরাজনীতিকরণ করতে করতে গণতন্ত্রের আজ ভঙ্গুর অবস্থা। এটার মধ্য দিয়েই ফ্যাসিবাদের উত্থান হয়েছে। রাজনৈতিক শক্তিকে যদি খাটো করেন, তাহলে চরম পন্থার উত্থান হতে পারে। চরমপন্থা শুধু বাম দিক দিয়ে আসে না, ডান দিক দিয়েও আসে। এটা মাথায় রাখতে হবে।’’
দোয়া-মাহফিলে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, রংপুর বিভাগের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, সহ প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিএনপির নির্বাহী সদস্য (দফতরে সংযুক্ত) মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।
বাংলানিউজবিডিহাব/এজেড/আরএস