সার্কিট হাউজের অর্ধশত গাছ কেটে নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ – BanglaNewsBDHub.com |

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo



ব্রিটিশ আমলে নির্মিত রাজশাহী সার্কিট হাউজ দীর্ঘদিন ধরেই শহরের অন্যতম ঐতিহাসিক ও নান্দনিক স্থাপনা। চারপাশজুড়ে শতবর্ষী নানা প্রজাতির বৃক্ষ। মাঝখানের পুকুর, ছায়াঘেরা আচ্ছাদন আর সবুজ ঘাসের গালিচা—সবমিলিয়ে জায়গাটিকে যেন বোটানিক্যাল গার্ডেনের মতো করে তুলেছিল। শীত কিংবা গরম—যে কোনো মৌসুমেই এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বিমোহিত হন দর্শনার্থীরা।

তবে সেই সৌন্দর্য আর থাকছে না। পুরোনো ভবনটি রেখে পাশেই ছয়তলা নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। ৫০ কোটি টাকার এই প্রকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে বৃক্ষনিধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রকল্পের অংশ হিসেবে সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি তাদের সঙ্গে আসা গাড়ির চালকদের থাকার জন্য আলাদা একটি চারতলা ভবনও নির্মাণ করা হবে। এরই মধ্যে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এক লাখ ৫৩ হাজার টাকায় ৫২টি গাছ নিলামে বিক্রির কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে বোয়ালিয়া ভূমি অফিস।

তবে এ বিষয়ে এসিল্যান্ড আরিফ হোসেন বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি। তবে তিনি জানান, এটি ১ নম্বর খাস খতিয়ানে থাকার কারণে তিনি এই কমিটিসদস্য। তাই নিলাম করেছেন। কিন্তু কোনো পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেননি।

সার্কিট হাউজের অর্ধশত গাছ কেটে নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ

সরেজমিনে ঘরে দেখা গেছে, সাকির্ট হাউজের সামনে অনেক জায়গা আছে। বিশাল মাঠ। তার ঠিক মাঝখানে সার্কিট হাউজ। সার্কিট হাউজের পেছনে রয়েছে বিশাল বাগান। নান জাতের শতবর্ষী গাছও দেখা গেছে। তার এক ধারে রয়েছে একটি পুকুর। সেখানে দেখা মিললো নানা জাতের অতিথি পাখিরও। মূল ভবনের শুরতেই রয়েছে একটি বড় কড়ই গাছ। যেটি দেখতে প্রায় শতবর্ষী। এর পাশেই রয়েছে নানা প্রজাতির গাছ। এগুলোর মধ্যে রয়েছে কড়ই, নারিকেল, তেঁতুল, রেইনট্রি, বাবলাসহ নানা জাতের গাছ।

সেখানে কথা হয় শুকুর আলীর সঙ্গে। তিনি সেখানে ঘাস কাটছিলেন। তিনি বলেন, ‌‘প্রায় ৪৫ বছর আগে থেকেই গাছগুলো দেখে আসছি। এখানে আম, নিম, কাঁঠাল, নারিকেলসহ বহু গাছ আছে। এগুলো সবই দামি গাছ। এই গাছগুলো থাকাতে ছায়া হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে লোক আসে। আমাদেরও ভালো লাগে। শুনছি গাছগুলো কেটে ফেলা হবে।’

সাকির্ট হাউজে কর্মরত জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে বড় যে গাছগুলো আছে, সবগুলোর বয়স শত বছর। এই গাছগুলোতে টিয়া পাখি আছে। সকালে যখন আসি তাদের ডাকে খুব ভালো লাগে।’

তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে গাছগুলো রক্ষার কোনো সুযোগ নেই বলে জানান গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম।

সচেতন নাগরিকরা বলছেন, উন্নয়ন প্রকল্প হলেও শতবর্ষী এসব গাছ ধ্বংস করা সমাধান নয়। ঐতিহাসিক স্থাপনাটিকে ঘিরে এভাবে বৃক্ষনিধনের উদ্যোগে সাধারণ মানুষ ও নাগরিক সংগঠনগুলোর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) রাজশাহী শাখার সভাপতি আহমদ সফিউদ্দিন বলেন, ‘উন্নয়নের নামে কোনোভাবেই প্রাণ ও প্রকৃতি ধ্বংস করতে দেওয়া হবে না। প্রকল্প চাই, তবে প্রকৃতিকে বাদ দিয়ে নয়।’

সূত্র : জাগো নিউজ

  • অর্ধশত গাছ
  • উদ্যোগ
  • নির্মাণ
  • ভবন
  • সার্কিট হাউজ
  • মন্তব্য করুন

    আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।