স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট
৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:২০ | আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:২৭
টানা আট ম্যাচ জিতে সবার আগে প্লে অফ নিশ্চিত করলেও এরপর থেকে যেন জিততেই ভুলে গেছে রংপুর রাইডার্স। একটা সময় যে দলটাকে মনে হচ্ছিল এবারের বিপিএলের অজেয়, তারাই হারল টানা চারটা ম্যাচ। পরপর তিন ম্যাচ হারার পর আজ খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচেও হারলেন নুরুল হাসান সোহানরা। ২২১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭৪ রানে আটকেছেন রংপুর। ৪৬ রানের এই জয়ে প্লে অফের আরও কাছে গেল খুলনা।
এই ম্যাচ জিততে হলে বিপিএলের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড নতুন করে লিখতে হতো রংপুরকে। কিন্তু খুলনার মুশফিক হাসান -হাসান মাহমুদের দারুণ বোলিংয়ে রান পাহাড়ে চাপা পড়ল রংপুর। সৌম্য সরকারের একার লড়াইও ঠেকাতে পারল না হার।
রান তাড়ায় নামা রংপুরের ব্যাটিং লাইন আপের এক প্রান্তে আসা যাওয়ার মিছিল থাকলেও সৌম্য লড়েছেন একাই। চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরে দুই ম্যাচ খেললেও ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। তবে আজ দলের বিপর্যয়ে খেলেছেন স্বভাবসূলভ স্টাইলে। ৩৩ বলে ছুঁয়েছেন এবারের আসরে নিজের প্রথম ফিফটি। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে নাসুম আহমেদকে দুই ছক্কা আর এক চারের মারে শুরু ব্যাটিং তাণ্ডবের। মিরাজ-হাসান মাহমুদদেরও খেলেছেন স্বাচ্ছন্দ্যে। অবশ্য থেমেছেনও সেই হাসানেরই দারুণ এক ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে। ৪৮ বলে ৭৪ রানের ইনিংসটি সৌম্য সাজান ছয়টি চার ও পাঁচটি ছক্কায়। স
দুইশোর বেশি রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রত্যাশিত শুরু পায়নি রংপুর। দলীয় ১১ রানে নাসুম আহমেদের বলে এলবিডব্লিউ হন ওপেনার তৌফিক তুষার। সাইফ হাসানও রান আউট হন মোহাম্মদ নওয়াজের সরাসরি থ্রোতে। ১৫ বলে ১৯ রান করে সৌম্যকে সঙ্গ দেয়া ইফতিখার আহমেদের ব্যাটে ভরসা পেলেও, রংপুরের জন্য সেটা স্থায়ী হতে দেয়নি খুলনা। আসরে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা মুশফিক হাসানের বলে ক্যাচ নেন নাঈম শেখ।
অন্য প্রান্তে আসা যাওয়ার মিছিলের মধ্যে রংপুরের ব্যাটিং অর্ডারে স্বস্তি ফেরান সৌম্য-মাহেদী জুটি। ২৩ বলে ৩৬ রানের জুটিতে মাহেদীর অবদানই বেশি; ১৪ বলে ২৭ রান করেন এই ডানহাতি ব্যাটার। অবশ্য নওয়াজের বলে কভারে মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছেড়েছেন হতাশায় ব্যাট ছুড়ে ফেলে। সেই ওভারেই এক বলের ব্যবধানে কোনো রান না করেই ফেরেন অধিনায়ক সোহান। দুই ছক্কায় ম্যাচ জমিয়ে তোলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ সাইফউদ্দিন, মুশফিকের তৃতীয় শিকার তিনি।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে নাঈম শেখের প্রথম বিপিএল সেঞ্চুরির সাথে বোসিস্টো-অংকনের দুটো দারুণ ক্যামিওতে ৪ উইকেটে ২২০ রান তোলে খুলনা। ওপেনিংয়ে নেমে অধিনায়ক মিরাজের ব্যাট থেকে শুরু ব্যাটিং ঝড়ের। মিরাজের বিদায়ের পর মাঝের সময়টায় একটু ধীরগতিতে রান উঠলেও সেটা পুষিয়ে ওঠেন বোসিস্টো-নাঈম জুটি। মাত্র ৪৭ বলে দুজন গড়েন মোড় ঘোরানো ৮৮ রানের জুটি।
নাঈমের ব্যাটও চওড়া হয় সেই জুটির সময়ই। ইনিংসের ১২তম ওভারে ইফতিখার আহমেদকে তিন ছক্কায় যার শুরু। ষষ্ঠ ওভারে এক ছক্কা ও এক ছয় মারা মাহেদীকে ১৬তম ওভারে পেয়েও মেরেছেন টানা দুই চার। তবে সাইফউদ্দিনের ওপর দিয়েই সবচেয়ে বড় ঝড়টা বইয়েছেন নাঈম। ১৮তম ওভারে দুই চারের সাথে এক ছক্কার প্যাকেজে পিটিয়েছেন এই ডানহাতি পেসারকে। বোসিস্টো আকিফ জাভেদের বলে সাইফউদ্দিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেও শেষ পর্যন্ত ছিলেন নাঈম। ৫৫ বলে করেছেন সেঞ্চুরি। রংপুরের বোলারদের পিটিয়ে ইনিংস শেষ করেছেন ৬২ বলে আট ছক্কা ও সাত চারে ১১১ রানে অপরাজিত থেকে। নাঈমের সেঞ্চুরির দিনে শেষদিকে আলো কেড়েছেন মাহিদুল অঙ্কনও। ১৫ বলে করেছেন ২৯ রান। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দুজন মিলে ৩২ বলে তোলেন ৭০ রান।
দিশাহীন বোলিংয়ের দিনে একটি করে উইকেট পেয়েছেন নাহিদ রানা, শেখ মাহেদী ও আকিফ জাভেদ।
banglanewsbdhub/জেটি
খুলনা টাইগার্স
বিপিএল ২০২৫
মেহেদী হাসান মিরাজ
রংপুর রাইডার্স
সৌম্য সরকার