যশোরের চৌগাছায় ধীরেন্দ্র নাথ নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী অপহরণের তিন ঘণ্টা পর পুলিশ উদ্ধার করেছে। ইতোমধ্যে দুই অপহরণকারীকে আটক করা হয়েছে এবং একটি প্রাইভেটকারও জব্দ করা হয়েছে। অপহরণের সঙ্গে কতজন জড়িত তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ, মামলার প্রক্রিয়া চলছে। অপহৃত ধীরেন্দ্র নাথ স্বর্ণপট্টি উপজেলার উত্তম জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ধীরেন্দ্র নাথকে অপহরণ করা হয়। পরে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
অপহৃত ধীরেনের স্ত্রী পদ্মরাণী দে জানান, তিনি শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। দোকানে বসতে পারে না। সোমবার সারাদিন বাড়িতেই ছিলেন তিনি। এখন বড় ছেলে দোকানে বসে। সন্ধ্যার আগে বাড়ি থেকে বের হয়ে দোকানে যায়। তিনি তার ছেলেকে দোকান বন্ধ করতে বলে বাড়িতে আসেন। পরে ছেলের বাসায় আসতে দেরি হচ্ছে দেখে সন্ধ্যার পর আবার দোকানে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। ছেলেটি দোকান বন্ধ করে বাসায় এলে আমি তাকে বলি তোমার বাবু কোথায়? ছেলে আমাকে বলেছে যে বাচ্চা পরে দোকানে যায়নি। তখন আমি তাকে বললাম তোমার বাবাকে ডাকো। সে ফোন করলে ফোন বন্ধ হয়ে যায়। আমার ছেলেকে বলো তোমার বাবাকে খুব অসুস্থ দেখে বাসায় নিয়ে আসতে।
খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে জানতে পারি, সন্ধ্যায় যশোর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে সাদা রঙের মাইক্রো গাড়িতে করে কেউ তাকে তুলে নিয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পর তার (ধীরেন) মোবাইল থেকে ছেলের ফোনে কল আসে। ওপাশ থেকে বলা হয়, তাকে জীবিত পেতে হলে ২০ লাখ টাকা প্রস্তুত করুন। ১০ মিনিট পর আবার কল এলো। ওরা বলে টাকাটা একটা ব্যাগে করে নিয়ে আসো। কোনো পুলিশে রিপোর্ট করলে ফল ভালো হবে না।
ধীরেনের ছেলে উত্তম কুমার দে বলেন, আমার বাবাকে সন্ত্রাসীরা অপহরণ করেছে। সোমবার আমাদের দোকানে হালখাতা ছিল। হালখাতার কথা অনেকেই জানেন। সেই হালখাতার টাকার জন্য সন্ত্রাসীরা বাবাকে অপহরণ করতে পারে। তারা আমার বাবার মোবাইল থেকে আমাকে ফোন করে ২০ লাখ টাকা দাবি করে।
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমরা অভিযান শুরু করেছি। এক পর্যায়ে সন্দেহভাজন একটি প্রাইভেটকার ধাওয়া করে দুইজনকে আটক করে। এদিকে ঝিকরগাছা উপজেলার পার্শ্ববর্তী শহরের একটি চায়ের দোকানের সামনে ধীরেন নাথকে ফেলে দেয় অপহরণকারীরা। তিনি বাড়িতে ডাকলে রাত সাড়ে ১০টায় পুলিশের একটি দল তাকে ঝোপ থেকে উদ্ধার করে।
তিনি আরও বলেন, আটকদের ডিবির হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অপহরণের সঙ্গে কতজন জড়িত তা জানার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।