
ছবি : সুপ্রিমকোর্ট
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহত-আহত ব্যক্তিদের ক্ষতবিক্ষত (ডিস্টর্ট) হওয়ার যেসব ছবি ও ভিডিও মানসিক পীড়া দেয় সেগুলো প্রকাশের ক্ষেত্রে ব্লার (ঝাপসা) করতে হবে বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার (৩ জুলাই) রুলসহ এ আদেশ দেন।
ওই ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিদের ছবি-ভিডিও সরাতে এবং সেগুলো ছড়িয়ে পড়া বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ গত ২৯ জুলাই রিটটি করেন। রিটের ওপর গত ৩১ জুলাই শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট আদেশের জন্য আজকের দিন রাখেন।
আদালতে রিটের পক্ষে তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া ও নূর মুহাম্মদ আজমী।
আদেশের পর আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ ধরনের ছবি ও ভিডিও প্রচার–প্রকাশের ক্ষেত্রে কিছু বিধিবিধান আছে। সে অনুসারে প্রচারিত–প্রকাশিত হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে। অর্থাৎ পোশাকহীন ও অগ্নিদগ্ধ অবস্থার ছবি–ভিডিও সরানো বা ব্লার করার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না—এ বিষয়ে রুল ইস্যু করা হয়েছে। আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে এ ধরনের ছবি–ভিডিও যখন প্রকাশিত বা প্রচারিত হবে তখন বিধিবিধানগুলো যেন মানা হয় এবং ক্ষতবিক্ষত যেসব ছবি–ভিডিও ইতিমধ্যে প্রকাশিত বা প্রচারিত হয়েছে, যা মানুষকে কষ্ট দেয়, সেগুলো ব্লার করে দিতে বলা হয়েছে।’
তবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী গণমাদ্যমকে বলেন, আদালত বলেছেন হতাহতের ডিস্টর্ট ছবি–ভিডিও প্রকাশের ক্ষেত্রে ব্লার (ঝাপসা) করতে হবে। অর্থাৎ ভবিষ্যতে প্রকাশের ক্ষেত্রে। এ বিষয়ে বিটিআরসিসহ বিবাদীদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ২১ জুলাই উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৩০ জুলাই পর্যন্ত হিসাবে, ওই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৩৪।
রিট আবেদনকারীর ভাষ্য, ওই দুর্ঘটনায় আহত-নিহত ব্যক্তিদের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ ও ডিজিটাল মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলোতে শিশুদের প্রায় পোশাকহীন, অগ্নিদগ্ধ ও আহত অবস্থায় দেখা যায়। এসব ছবি-ভিডিও শিশুদের পরিবারের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদের ট্রমাটাইজ (মানসিকভাবে আঘাত) করে দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুযায়ী এ ধরনের দুর্ঘটনায় আহত–নিহত ব্যক্তিদের ছবি–ভিডিও প্রকাশে সংবেদনশীল হওয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে।