হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ৯৫২ পুলিশ – BanglaNewsBDHub.com |

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo



গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে যাওয়ার পর শিক্ষার্থীদের প্রচণ্ড প্রতিরোধের মুখে পড়ে পুলিশ। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করলে ভুক্তভোগী ও তাদের স্বজনরা মামলা করতে থাকেন। হত্যা ও হত্যাচেষ্টার এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও আসামি করা হয়। অভিযুক্তদের তালিকায় সাবেক ও বর্তমান শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে কনস্টেবলরাও রয়েছেন।

পুলিশ সদর দফতরের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত পুলিশের সাবেক ও বর্তমান সদস্য ৯৫২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার মামলা রয়েছে। এদের মধ্যে ৪৭ জন সাবেক আইজিপি ও সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি। ডিবির সাবেক প্রধান ডিআইজি হারুন অর রশিদকে সর্বোচ্চ ১৭১টি মামলার আসামি করা হয়েছে। মামলার সংখ্যার দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ১৫৫টি মামলা রয়েছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে মামলায় মাত্র ২৮ পুলিশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল হক ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।

পুলিশের তৎকালীন বিতর্কিত কর্মকর্তাদের অধিকাংশকে গ্রেফতার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কও বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর বলেন, মামলার পর যাদের বিরুদ্ধে আমরা সুনির্দিষ্ট তথ্য পাচ্ছি এবং জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এ পর্যন্ত পুলিশের ২৮ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সাবেক আইজিপির নামে ৭টি মামলা:

সূত্র জানায়, সারাদেশে হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় জড়িত রয়েছেন পুলিশের ছয় সাবেক আইজিপি। তাদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এর মধ্যে হাসান মাহমুদ খন্দকারের বিরুদ্ধে ৭টি মামলা, একেএম শহীদুল হকের বিরুদ্ধে ২৩টি মামলা, জাবেদ পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে ২টি, বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ১১টি, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে ১৫৫টি এবং ভুটাপেক্ষার সাবেক আইজিপি এম সানাউল হকের বিরুদ্ধে ১টি মামলা রয়েছে। এছাড়া বর্তমান ৫ অতিরিক্ত আইজিপিওকেও আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন মল্লিক ফখরুল ইসলাম, কামরুল আহসান, আবু হাসান মুহাম্মদ তারিক, ওয়াই এম বেলালুর রহমান ও সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।

অভিযুক্ত সাবেক ৩৬ অতিরিক্ত আইজিপি, নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, শেখ হেমায়েত উদ্দিন, মোখলেছুর রহমান, মোঃ মোখলেছুর রহমান, আবদুস সালাম, বিনয় কৃষ্ণ বালা, নওশের আলী, আছাদুজ্জামান, মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, মোঃ ইকবাল বাহার, ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান। , ইব্রাহিম ফাতেমি, মাহবুব হোসেন, রুহুল আমিন, খন্দকার গোলাম ফারুক, শেখ মোহাম্মদ মারুফ হাসান, হুমায়ুন কবির, জামিল আহমেদ, আতিকুল ইসলাম, এম খুরশিদ হোসেন, বনজ কুমার মজুমদার, মনিরুল ইসলাম, ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ, মীর রেজাউল আলম, মোহাম্মদ আলী মিয়া, মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, দিদার আহমেদ, খন্দকার আহমেদ, মো. লুৎফুল কবির, কৃষ্ণপদ রায়, বশির আহমেদ, হাবিবুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, একেএম হাফিজ আখতার, ড. মাহিদ উদ্দিন, মোঃ আব্দুল বাতেন।

আসামির তালিকায় নাম থাকা সাবেক ডিআইজিরা হলেন- মোঃ এসএম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান, আব্দুল জলিল মন্ডল, মোঃ হুমায়ুন কবির, এসএম মনিরুজ্জামান, নিবাস চন্দ্র মাঝি, শৈবাল কান্তি চৌধুরী, শেখ নাজমুল আলম, ইমাম হোসেন, মোঃ মনিরুজ্জামান, মো. আসাদুজ্জামান, রিপন সরদার ও খালিদ হাওলাদার। এছাড়া বর্তমান ডিআইজিরা হলেন ইমতিয়াজ আহমেদ, আমিনুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান, একেএম নাহিদুল ইসলাম, মোল্লা নজরুল ইসলাম, নূরে আলম মিনা, মোঃ জাকির হোসেন খান, মোঃ সাইফুল ইসলাম, সৈয়দ নুরুল ইসলাম, আনিচুর রহমান, হারুন অর রশিদ।

সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি চৌধুরী মঞ্জুরুল করিব ও আবদুল কাহার আকন্দের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। আসামি বর্তমান অতিরিক্ত ডিআইজিরা হলেন টুটুল চক্রবর্তী, শামসুন্নাহার, মারুফ হোসেন সরদার, বিপ্লব কুমার সরকার, মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁইয়া, কামরুজ্জামান, রশিদুল হক, মোঃ আনোয়ার হোসেন, খন্দকার নুরুন্নবী, মোঃ মাসুদ রানা, মোঃ জায়েদুল আলম, মো. এস এম মেহেদী হাসান, এহসান উল্লাহ, ফারুক আহমেদ, উত্তম কুমার পাল, লিটন কুমার সাহা, সঞ্জিত কুমার রায়, নাসিয়ান ওয়াজেদ, মোঃ ফরিদ উদ্দিন, মোঃ মোখলেছুর রহমান, মোহাম্মদ সিরাজ আমিন, মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন, মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, মোঃ আলমগীর হোসেন, মোঃ জাফর হোসেন, আজবাহার আলী শেখ, মো. , রিফাত রহমান শামীম, মশিউর রহমান, নাবিদ কামাল শৈবাল, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, মোঃ শহিদুল্লাহ, মোস্তাফিজুর রহমান, মোঃ আশরাফ আলী ভূঁইয়া, সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, প্রলয় কুমার জোয়াদ্দার, আয়েশা সিদ্দিকা, মোক্তার হোসেন, সুনন্দা রায়, ইলতুৎমিশ, হায়াতুল ইসলাম, কাজী আশরাফুল আজিম, জসিম উদ্দীল মোল্লা, সামসুল ইসলাম আকন্দ প্রমুখ।

পুলিশ সুপার (এসপি):

আসামিদের তালিকায় রয়েছেন সাবেক পুলিশ সুপার মোঃ আলতাফ হোসেন, মোঃ মিজানুর রহমান, এইচএম আজিজুল হক। এ ছাড়া আসামিরা হলেন- সৈয়দ বজলুর করিম, মো: মহিউদ্দিন ফারুকী, এসএম তানভীর আরাফাত, এসএম শফিউল্লাহ, কাজী মনিরুজ্জামান, মো: আবু মারুফ হোসেন, গোলাম মোস্তফা রাসেল, তারিক বিন রশিদ, মানশ কুমার পোদ্দার। , আব্দুল আহাদ, মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন, রাজিব আল মাসুদ, মোহাম্মদ মমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া, মোহাম্মদ হাবিবুন নবী আনিচুর রশিদ, মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন, মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান আল মামুন, আ ফ ম আল কিবরিয়া, মোহাম্মদ আশরাফ ইমাম, মোঃ শহিদুল ইসলাম, মিশুক চাকমা, ইমাম মোহাম্মদ শাদিদ, মোঃ আসাদুজ্জামান, রহমত উল্লাহ, ইয়াছিন ইসলাম, মোঃ রফিকুল ইসলাম প্রমুখ। আরাফাত, মোঃ শাহজাহান, আব্দুল জলিল, মোঃ জসিম উদ্দিন, শাহরিয়ার আল মামুন, মাহবুব উজ জামান, তাহিয়াত আহমেদ চৌধুরী, মোঃ হুমায়ুন কবির, মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম, ইকবাল হোসেন, মোসা. লাকী, আনসার উদ্দিন, মাহবুব আলম খান, মোঃ মামুন, মাহফুজুল আল রাসেল, তানভীর সালেহীন ইমান, জাহিদ তালুকদার, আরিফুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম, সুমন দেব, মির্জা সালাহউদ্দিন, মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম, শাহেন শাহ মাহফুজ, গোবিন্দ চন্দ্র, সনাতন চক্রবর্তী, মো. আজাদ রহমান, রাজীব ফারহান, হাসান আরাফাত, জুয়েল রানা, মোঃ আরিফুজ্জামান, নুরুল আমিন, আবদুল্লাহ আল কাফি, হাফিজ আল ফারুক, মোঃ শাহ নুরে আলম পাটোয়ারীর সাথে ডিএমপির শাহবাগ ও বাড্ডা বিভাগের দুই সাবেক ডিসি (শাহবাগ ও বাড্ডা নামে ডিএমপির কোনো বিভাগ নেই। কিন্তু এই দুই এলাকা জুড়ে আছে। যথাক্রমে রমনা ও গুলশান বিভাগের অন্তর্ভুক্ত)।

আলোচিত কর্মকর্তাদের মধ্যে পলাতক এসবির সাবেক প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপি গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় কুমার জোয়ারদার, ঢাকা জেলার সাবেক ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম প্রমুখ। এসব কর্মকর্তাসহ পুলিশের অনেক শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে।

সূত্র: যুগান্তর

  • অভিযুক্ত
  • পুলিশ
  • মামলা
  • হত্যার চেষ্টা
  • মন্তব্য করুন

    আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।