
কুমিল্লায় অন্যের হয়ে হাজতবাসের জন্য এসে ধরা পড়েছেন নুর মোহাম্মদ নামে এক যুবক। পরে ১৪ আগস্ট থেকে তাঁকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে। নুর মোহাম্মদ স্বীকার করেছেন, ৩০ হাজার টাকা নিয়ে তিনি অন্যের হয়ে মাদক মামলায় জেল খাটতে চেয়েছিলেন।
নুর মোহাম্মদের বাড়ি কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে, বাবার নাম ফকির আহাম্মদ। প্রায় ১৪ বছর আগে দায়ের মাদক মামলার প্রকৃত আসামি জোবাইদ পুতিয়ার বাড়িও কক্সবাজারের টেকনাফের নাইট্যমপাড়ায়, বাবার নাম আবদুর রহমান।
আদালত ও কারা সূত্র জানায়, ২০১১ সালে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার একটি মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হন জোবাইদ পুতিয়া। ওই বছরের ৯ আগস্ট থেকে ২০১২ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি কুমিল্লা কারাগারে ছিলেন। এর পর জামিনে মুক্ত হয়ে পলাতক জোবাইদ।
এরই মধ্যে ২০১৮ সালে মামলাটি বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা আদালতে স্থানান্তর করা হয়। শুনানির পর মামলাটি এখন রায়ের অপেক্ষায়। হঠাৎ করে গত আগস্টে এ মামলায় নতুন মোড় নেয়।
গত ১২ আগস্ট কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আইনজীবী এ এইচ এম আবাদের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করেন জোবাইদ পুতিয়া পরিচয় দেওয়া এক যুবক। আদালতের আদেশের পরে তাঁকে কারাগারে নিলে বিপত্তি দেখা দেয়।
কারা সূত্র জানায়, কারাগারে আসামির ফিঙ্গার প্রিন্ট রিডারে (এনআইডি) নুর মোহাম্মদ নাম আসে। তখন কারা কর্মকর্তারা জোবাইদ পুতিয়া পরিচয় দেওয়া যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এক পর্যায়ে নুর মোহাম্মদ স্বীকার করেন, তিনি ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে জোবাইদ পুতিয়ার হাজতবাসের জন্য কারাগারে এসেছেন। প্রকৃত আসামি তাঁকে আশ্বাস দিয়েছিলেন– কারাগারে যাওয়ার তিন দিনের মধ্যেই তাঁকে জামিনে মুক্ত করবেন।
আইনজীবী এ এইচ এম আবাদ বলেন, আত্মসমর্পণের দিন আমি আসামির নাম জিজ্ঞেস করলে তিনি জুবাইদ পুতিয়া বলেন। আগে তাঁকে দেখিনি। এনআইডি চেয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন– প্রবাস থেকে আসায় তাৎক্ষণিকভাবে সঙ্গে নেই, পরে দেবেন। কিন্তু কারাগারে গিয়ে তো সব ফাঁস হয়ে গেছে। পেশাগত জীবনে আমি এমন প্রতারণা দেখিনি। এক ব্যক্তির অনুরোধে আমার এক সহকারী নুর মোহাম্মদকে এনেছিলেন।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার হালিমা আক্তার বলেন, আমরা গত ১৪ আগস্টই ফিঙ্গার প্রিন্ট রিডারে আসামির প্রকৃত পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হই। নকল আসামি টাকার লোভে এমন করেছেন বলে জানান। বিধি অনুযায়ী আমরা বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষ ও আদালতকে জানিয়েছি। আদালতের নির্দেশনা পেলে প্রকৃত আসামিকে গ্রেপ্তারসহ নুর মোহাম্মদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র : সমকাল