২০০ কোটি টাকার ওষুধের কাঁচামাল পুড়ে গেছে : ঔষধ শিল্প সমিতি – BanglaNewsBDHub.com |

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo



হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গত শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাঁচামাল পুড়ে গেছে। ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির দাবি, দেশের শীর্ষস্থানীয় ৪৫টি কোম্পানির প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তেজগাঁওয়ে সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য দেন সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম মোসাদ্দেক হোসেন। সমিতির মহাসচিব ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের পরপরই আমরা সমিতির পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি থেকে প্রাথমিকভাবে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করেছি। সে অনুযায়ী, ইতিমধ্যে দেশের শীর্ষ ৪৫টি কোম্পানির প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য এলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে মনে করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুড়ে যাওয়া পণ্যের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক, ভ্যাকসিন, হরমোন, ডায়াবেটিক ও ক্যানসার জাতীয় ওষুধ উৎপাদনের কাঁচামালও রয়েছে।’

ডা. জাকির হোসেন জানান, অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল ভস্মীভূত হওয়ায় শিল্প খাতে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। এই আকস্মিক ক্ষতি বহুবিধ ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।

তিনি আরও জানান, ওষুধ শিল্প দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রায় শতভাগ পূরণ ছাড়াও রপ্তানি সম্ভাবনা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ খাত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশেষ সুনাম অর্জন করেছে। বাংলাদেশে তৈরি মানসম্পন্ন ওষুধ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ ১৬০ টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।

সমিতি জানায়, দেশের ওষুধ শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় ৯০ শতাংশ চীন, ভারত ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এ ছাড়া প্যাকেজিং উপকরণ, যন্ত্রপাতি ও স্পেয়ার পার্টসও আমদানি করা হয়। এসব কাঁচামালের বড় অংশ জীবন রক্ষাকারী ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।

সমিতির কোষাধ্যক্ষ মুহাম্মাদ হালিমুজ্জামান বলেন, ‘কিছু স্পেয়ার পার্টস ও মেশিনারিজও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা আবার আমদানি সময়সাপেক্ষ। এখনো সাপ্লাই চেইনে সমস্যা হচ্ছে না, তবে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের সহায়তা প্রয়োজন।’

সমিতির নেতারা বলেন, যেসব পণ্য অন্যান্য বিমানবন্দরে নামানো হয়েছে, সেসব নিয়েও আমরা চিন্তিত—কারণ এসব কাঁচামাল নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখতে হয়। এখানেও আমরা এক ধরনের ক্ষতির মুখে রয়েছি। পুড়ে যাওয়া পণ্যের একটি বড় অংশ ছিল নারকোটিকস বিভাগ থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত। এসব পণ্য পুনরায় আমদানি জটিল ও সময়সাপেক্ষ, কারণ এতে ধাপে ধাপে বহু অনুমোদন নিতে হয়।

সমিতির ধারণা, পুড়ে যাওয়া পণ্যের হিসাব আরও বাড়বে। প্রতিটি কাঁচামালের ওপর নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট চূড়ান্ত পণ্যের উৎপাদন অনিশ্চয়তায় পড়বে। প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থনৈতিক প্রভাব পড়তে পারে বলেও সমিতির হিসাব।

  • ওষুধ
  • কাঁচামাল
  • মন্তব্য করুন

    আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।