স্পেশাল করেসপডেন্ট
৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৩০ | আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:৪২
ঢাকা: প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে ২০২৫ সালের মধ্যেই নির্বাচন চায় বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী এ ব্যাপারে দলের অবস্থান তুলে ধরেন।
এর আগে, ১০ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে গুলশান কার্যালয়ে বৈঠক করেন আফেন্দী।
বৈঠকে তার সঙ্গে ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ, সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার, মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তাফাজ্জল হক আজীজ, মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ছিলে বিএনপির লিয়াঁজো কমিটির প্রধান এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
বৈঠক শেষে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মুনজুরুল ইসলাম আফেন্দি বলেছেন, ‘‘অনেকগুলো জায়গায় আমরা একমত হয়েছি। প্রথম যে জায়গাতে একমত হয়েছি, সেটা হলো- ফ্যাসিবাদ থেকে দেশ মুক্ত হলেও পরাজিত, পতিত স্বৈরাচারের কূটচাল থেকে দেশ মুক্ত হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে আমরা একমত হয়েছি, দেশ প্রেমিক আপামর জনসাধারণের একটা ঐক্য দরকার। যে কোনো ত্যাগের বিনিময়ে ঐক্য অটুট রাখতে হবে। এটা একটা মৌলিক জায়গা।’’
তিনি বলেন, ‘‘খুব যৌক্তিক সময়ের মধ্যে আমরা দ্রুত নির্বাচন চাই। এর আগেও আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, এখনো বলছি, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে ২০২৫ সালের মধ্যেই বহুল প্রত্যাশিত নির্বাচন চাই। আশা করি অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অর্থাৎ সব দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য যতটুকু সংস্কার দরকার ততটুকু সংস্কার দ্রুত শেষ করে জাতির বহুল প্রত্যাশিত নির্বাচনের পথে দেশকে নিয়ে যাবে— আমরা এমটা প্রত্যাশা করছি।’’
‘‘এ ছাড়া আমরা দ্রব্যমূল্যর ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আলোচনা করেছি, জনসাধারণ ইজ্জত-আব্রু-নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা ক্ষমতায় আসলে কুরআন সুন্নাহবিরোধী কোনো আইন করব না, এরকম বিষয় আমাদের মধ্যে আলোচনায় আসছে। ধর্মীয় মূল্যবোধকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা পথ চলব— এ বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এমন কোনো ফাঁদে পা দেওয়া ঠিক হবে না, যাতে পরাজিত শক্তির পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে তৈরি হয়’’— বলেন মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘বৈঠকে দেশের আর্ত-সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অনেক বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। আমরা এটাও মনে করি যে এই বিষয়টি নিয়ে দেশপ্রেমিক, গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে দ্বিমতের কোনো কারণও নাই। আমরা যে যুগপৎ আন্দোলন করছিলাম, সেই যুগপৎ আন্দোলন সব সময় সরকারের বিরুদ্ধে হতে হবে, এমন কোনো কথা নাই। আমরা যেকোনো আকাঙ্ক্ষা পূরণে যুগপৎ আন্দোলন করতে পারি।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমরা দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই ফ্যাসিবাদের পতন চেয়েছি। ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। কিন্তু, আমরা এখনো গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারি নাই। আমরা বিশ্বাস করি, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক একটা নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে। এই রকম একটা নির্বাচনের জন্য যা কিছু সংস্কার প্রয়োজন, সেগুলো করেই এ নির্বাচন হবে। কিন্তু আমরা মনে করি না, সেটা (সংস্কার) করে নির্বাচন করতে খুব বেশি সময় লাগবে।’’
বাংলানিউজবিডিহাব/এজেড/ এইচআই