
অনিবন্ধিত বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ভারত । বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল জানান, বাংলাদেশি নাগরিকদের একটি তালিকা ইতোমধ্যেই ঢাকা পাঠানো হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ২,৩৬০ জনের তথ্য যাচাই অপেক্ষমাণ রয়েছে।
তিনি বলেন, যেসব বিদেশি নাগরিক ভারতে অবৈধভাবে বসবাস করছেন, তাদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানিয়েছি যেন তারা দ্রুত জাতীয়তা যাচাইয়ের কাজ সম্পন্ন করে।
দিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, তালিকাভুক্ত ২,৩৬৯ জন বাংলাদেশি নাগরিকের নাম ও তথ্য নিয়ে একটি চিঠি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ট্রাইব্যুন ইন্ডিয়া।
ভারতজুড়ে অনিবন্ধিতদের বিরুদ্ধে অভিযান
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের একাধিক রাজ্যে অনিবন্ধিত বাংলাদেশি অভিবাসীদের শনাক্ত ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে অভিযান জোরদার করা হয়েছে।
২১ মে উড়িশ্যার আইনমন্ত্রী পৃত্বিরাজ হরিচন্দন জানান, রাজ্য প্রশাসনকে অনিবন্ধিত বাংলাদেশিদের শনাক্ত করে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১৪ মে রাজস্থানের আইন ও সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী যোগারাম প্যাটেল জানান, রাজ্যে প্রায় ১,০০০ জন সন্দেহভাজন বাংলাদেশি অভিবাসী বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাস করছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
১০ মে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ঘোষণা করেন, সীমান্তবর্তী এলাকায় অনুপ্রবেশ রোধে পুশ ব্যাক কৌশল বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই অবৈধ অভিবাসীদের সরাসরি সীমান্তের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
কূটনৈতিক পটভূমি ও নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরে ভারতের অভ্যন্তরে নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়ছে।
সম্প্রতি কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিরীহ বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনাও এই অভিযান জোরদারের একটি পটভূমি হয়ে উঠেছে। ভারত সরকার মনে করছে, অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে কিছু উপাদান দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।