গণ অধিকার পরিষদ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এমনটি জানিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান। শাকিল উজ্জামান তার বক্তব্যে বলেছেন, “গণ অধিকার পরিষদ একটি তরুণ ও জনগণের দল। দেশের সর্বত্র এবং দেশের বাইরেও আমাদের দলের গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো দেশের সর্বত্র সংগঠনগত ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা।”
সাংগঠনিক কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
শাকিল উজ্জামান জানিয়েছেন, দলটির লক্ষ্য হলো সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করা। এজন্য ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নতুন কমিটি গঠনের কাজ চলছে। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের সহযোগী অঙ্গসংগঠনগুলোকে আরও সক্রিয় করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এভাবে আমরা আমাদের সংগঠনকে সুসংহত করে দেশের সব অঞ্চলে আমাদের অবস্থান নিশ্চিত করতে চাই।”
নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন ও ট্রাক প্রতীক
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর বাসস্ট্যান্ডে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন থেকে ট্রাক প্রতীক নিয়ে নিবন্ধন পাওয়ার পর দলের উদ্যোগে আনন্দ র্যালি ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। শাকিল উজ্জামান জানান, “আমরা ট্রাক প্রতীকে নিবন্ধন পেয়েছি, যা জনগণের চাহিদা অনুযায়ী হয়েছে। আমাদের দলের নতুন নিবন্ধন আমাদের রাজনৈতিক আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য।”
সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ
শাকিল উজ্জামান সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, “পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকার একটি ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল। তাদের গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে আমাদের নিবন্ধন মঞ্জুর করা হয়নি। তবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে সেই ফ্যাসিবাদী সরকারকে পতন ঘটানো সম্ভব হয়েছে।”
দুর্নীতি ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান
দলের সভাপতি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে গণ অধিকার পরিষদ দুর্নীতি, অনিয়ম, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করবে বলে শাকিল উজ্জামান ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা কোনো ধরনের দুর্নীতিবাজ বা দখলদারের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন দেব না। আমাদের লক্ষ্য হলো, জনগণের অধিকার সুরক্ষা করা এবং কোনো ধরনের অশান্তি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া।”
সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান
শাকিল উজ্জামান সাংবাদিকদের নির্ভয়ে কলম চালানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “যদি কোনো দুর্নীতিবাজ বা দখলদার আমাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে, তাহলে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের পতন ঘটাব। গণভবনের উদাহরণ দিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, কিভাবে ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারকে উৎখাত করা হয়েছিল।”
নির্বাচনের পরবর্তী কর্মসূচি
শাকিল উজ্জামান আবারও বলেন, “আমরা আমাদের সকল সহযোগী অঙ্গসংগঠনকে আরও সক্রিয় করার জন্য ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠনের কাজ করছি। আমাদের লক্ষ্য হলো, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়া এবং দেশের গণমানুষের সমর্থন অর্জন করা।”
নূরুল হক নূরের মন্তব্য
গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর বলেছেন, “গণ অধিকার পরিষদ ইতিমধ্যে জনগণের মাঝে সাড়া ফেলেছে। আমরা বিশ্বাস করি, সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশে গণ অধিকার পরিষদ ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। সরকার এখন পর্যন্ত তিস্তা চুক্তি করতে পারেনি, যা রংপুর অঞ্চলের জনগণের জন্য বড় সমস্যা।”
নুরুল হক নূর আরও বলেন, “ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত হলে আমরা সরকার গঠন করতে সক্ষম হব। তবে তার জন্য প্রয়োজন জনগণের আন্দোলন ও রাজপথে গণ-আন্দোলন গড়ে তোলা।”