
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ৪৩তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) থেকে বাদ পড়া ২২৭ জন চাকরিপ্রার্থী পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারবেন। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সিনিয়র সহকারী সচিব মো. উজ্জল হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, গত বছরের জানুয়ারিতে ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় ২ হাজার ১৬৩ জন প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ করেছিল সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। পরে পুলিশের বিশেষ শাখা ও জেলা প্রশাসকদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৫ অক্টোবর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকায় ৫৯ জন ও ৪০ জনকে বাদ দিয়ে ২ হাজার ৬৪ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
সমালোচনা এড়াতে এবং সরকারি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আস্থা ও আস্থা ফিরিয়ে আনতে ‘ক্লিন ইমেজ’ প্রার্থীদের চিহ্নিত করতে গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই ও ডিজিএফআই-এর সুপারিশকৃত ২ হাজার ১৬৩ জন প্রার্থীকে পুনঃনিরীক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতে, এনএসআই এবং ডিজিএফআই-এর প্রতিবেদনে ২২৭ জন প্রার্থীর বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য পাওয়া গেছে। এই কারণে তারা অস্থায়ী নিয়োগের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হয় এবং আরও যাচাই-বাছাই ও তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৪৩তম বিসিএসে নিয়োগের জন্য ১৫ অক্টোবরের বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে সোমবার নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১৬৮ জন প্রার্থী বাদ পড়েছেন। এর আগে গত ১৫ অক্টোবর প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন ক্যাডারে ৯৯ জনকে বাদ দেওয়া হয়। ৪৩তম বিসিএস থেকে ঝরে পড়েছেন ২৬৭ জন।
প্রজ্ঞাপন বাদ পড়ার প্রতিবাদে বুধবার সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেন তারা। এ সময় সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সুপারিশ পাওয়ার পর দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপন থেকে কেন বাদ রাখা হলো, তা জানতে চেয়েছিলেন তারা। এ ছাড়া তারা আবারও প্রজ্ঞাপনে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান।
সেখানে উপস্থিত এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, চার বছর কষ্ট করে নিয়মিত লেখাপড়ার পর পিএসসির সুপারিশ পেয়েছি। আমরা নতুন চাকরিতে যোগ দিতে পেরে খুশি হলেও গেজেট থেকে বাদ পড়েছিলাম। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আমাদের বাদ দেওয়ার কোনো কারণ উল্লেখ করেনি।
আরেক প্রার্থী বলেন, তারা বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার কথা বলছেন, কিন্তু নতুন চাকরিতে প্রবেশের আগেই বৈষম্যের শিকার হয়েছি। আমাদের নামে মামলা না থাকলে তারা কেন আমাদের বাদ দিল? আমাদের সহযাত্রীরা যোগ দেবে এবং আমরা চোখের জল মুছে দেব। আমাদের বুকটা কেঁপে উঠল। আমরা এই বৈষম্য থেকে মুক্তি চাই। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যারা বাদ পড়েছেন তাদের সবাইকে জানাতে চাই।
এর আগে ৪১তম বিসিএসের গেজেট থেকে ৬৭ জন, ৪০তম বিসিএস থেকে ৩৪ জন, ৩৭তম বিসিএসে ৬১ জন, ৩৮তম বিসিএস থেকে ৭৫ জন এবং ৩৬তম বিসিএস থেকে ৩৮ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।