২০২৫ সালের জন্য ছুটির তালিকা সম্প্রতি প্রকাশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গতকাল সোমবার (২১ অক্টোবর) এই তালিকা ঘোষণা করা হয়। এতে দেখা যায়, আগামী বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উৎসব ও দিবসগুলোতে সরকারি ছুটির ব্যবস্থা কেমন হবে।

ছুটির তালিকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পবিত্র ঈদুল ফিতর, যা আগামী বছরে পাঁচ দিনের ছুটি থাকবে। এখানে একটি সাপ্তাহিক ছুটি যুক্ত করা হয়েছে। একইভাবে ঈদুল আজহায় ছুটি থাকবে ছয় দিন, যার মধ্যে একটি দিন সাপ্তাহিক ছুটি। শারদীয় দুর্গাপূজায় দুই দিনের ছুটি থাকবে।

ছুটির তালিকার অনুমোদন ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে দেওয়া হয়। আগামী বছরে সাধারণ ছুটি ১২ দিন এবং নির্বাহী আদেশের ছুটি ১৪ দিন থাকবে। তবে উল্লেখযোগ্য যে, সাধারণ ছুটির মধ্যে পাঁচ দিন এবং নির্বাহী আদেশের ছুটির মধ্যে চার দিনই সাপ্তাহিক ছুটি হিসেবে গণনা করা হবে।

গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ ছুটিগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • ২১ ফেব্রুয়ারি: শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
  • ২৬ মার্চ: স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস
  • ২৮ মার্চ: জুমাতুল বিদা
  • ৩১ মার্চ: ঈদুল ফিতর
  • ১ মে: মে দিবস
  • ২১ মে: বুদ্ধপূর্ণিমা (বৈশাখী পূর্ণিমা)
  • ৭ জুন: ঈদুল আজহা
  • ১৬ আগস্ট: জন্মাষ্টমী
  • ৫ সেপ্টেম্বর: ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)
  • ২ অক্টোবর: দুর্গাপূজা (বিজয়া দশমী)
  • ১৬ ডিসেম্বর: বিজয় দিবস
  • ২৫ ডিসেম্বর: যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন (বড়দিন)

নির্বাহী আদেশে ছুটির তালিকার মধ্যে রয়েছে:

  • ১৫ ফেব্রুয়ারি: শবে বরাত
  • ২৮ মার্চ: শবে কদর
  • ২৯ ও ৩০ মার্চ এবং ১ ও ২ এপ্রিল: ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে মোট চার দিন
  • ১৪ এপ্রিল: বাংলা নববর্ষ
  • ঈদুল আজহার আগে ৫ ও ৬ জুন এবং পরে ৮ থেকে ১০ জুন মোট পাঁচ দিন
  • ৬ জুলাই: আশুরা
  • ১ অক্টোবর: দুর্গাপূজার মহানবমী

ছুটির তালিকার মধ্যে ঐচ্ছিক ছুটির বিষয়েও উল্লেখ রয়েছে। মুসলিমদের জন্য কিছু ঐচ্ছিক ছুটি আছে, যেমন:

  • ২৮ ফেব্রুয়ারি: শবে মিরাজ
  • ৩ এপ্রিল: ঈদুল ফিতরের পরের তৃতীয় দিন
  • ১১ জুন: ঈদুল আজহার পরের চতুর্থ দিন
  • ২০ সেপ্টেম্বর: আখেরি চাহার শোম্বা
  • ৪ অক্টোবর: ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্যও কিছু ঐচ্ছিক ছুটির দিন নির্ধারণ করা হয়েছে, যেমন:

  • ৩ ফেব্রুয়ারি: সরস্বতী পূজা
  • ২৬ ফেব্রুয়ারি: শিবরাত্রি ব্রত
  • ১৪ মার্চ: দোলযাত্রা
  • ২৭ মার্চ: হরিচাঁদ ঠাকুরের আবির্ভাব
  • ২১ সেপ্টেম্বর: মহালয়া
  • ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর: দুর্গাপূজা (সপ্তমী ও অষ্টমী)
  • ৬ অক্টোবর: লক্ষ্মীপূজা
  • ৩১ অক্টোবর: শ্যামাপূজা

খ্রিষ্টানদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটির মধ্যে রয়েছে:

  • ১ জানুয়ারি: ইংরেজি নববর্ষ
  • ৫ মার্চ: ভস্ম বুধবার
  • ১৭ এপ্রিল: পুণ্য বৃহস্পতিবার
  • ১৮ এপ্রিল: পুণ্য শুক্রবার
  • ১৯ এপ্রিল: পুণ্য শনিবার
  • ২০ এপ্রিল: ইস্টার সানডে
  • ২৪ ও ২৬ ডিসেম্বর: যিশুখ্রিষ্টের জন্মোৎসব (বড়দিনের আগে ও পরে)

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্যও কিছু ঐচ্ছিক ছুটি আছে:

  • ১১ ফেব্রুয়ারি: মাঘী পূর্ণিমা
  • ১৩ এপ্রিল: চৈত্র সংক্রান্তি
  • ১০ ও ১২ মে: বুদ্ধপূর্ণিমা (পূর্বের ও পরের দিন)
  • ৯ জুলাই: আষাঢ়ী পূর্ণিমা
  • ৬ সেপ্টেম্বর: মধু পূর্ণিমা
  • ৫ অক্টোবর: প্রবারণা পূর্ণিমা (আশ্বিনী পূর্ণিমা)

এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কর্মচারীদের জন্য ১২ ও ১৫ এপ্রিল বৈসাবি এবং অন্যান্য সামাজিক উৎসবের জন্য ঐচ্ছিক ছুটি রাখা হয়েছে।

এভাবে, ২০২৫ সালের ছুটির তালিকা দেশের মানুষের জীবনযাত্রার ওপর অনেক প্রভাব ফেলবে। এই তালিকা থেকে আমরা জানতে পারি, কোন দিনগুলোতে ছুটির জন্য পরিকল্পনা করা উচিত এবং কোন উৎসবগুলোতে আমাদের বিশেষভাবে সময় দিতে হবে।