সম্প্রতি, সারা দেশে চিকিৎসকরা তাদের নিরাপত্তা এবং হামলার বিচার দাবিতে সব ধরনের চিকিৎসাকেন্দ্রে সেবা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। এই কর্মসূচিকে তাঁরা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ বলে অভিহিত করেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্লকের সামনে বেলা দুইটার পরে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন আবদুল আহাদ এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন। তিনি জানান, সারা দেশের মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সবকিছুই এই কর্মসূচির আওতাভুক্ত হবে।

গতকাল রাতের ঘটনা হলো—ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। হামলার বিচার এবং নিরাপত্তার দাবিতে আজ সকালে জরুরি বিভাগে সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পরেও কোনও সমাধান আসেনি, ফলে চিকিৎসকরা সারা দেশে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন।

চার দফা দাবি:

১. হাসপাতালের মতো জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানে হামলার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা। দ্রুত বিচার আইনের মাধ্যমে তাঁদের শাস্তির আওতায় আনা।

২. স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এ জন্য দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে স্বাস্থ্য পুলিশের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করা।

৩. রোগীর ভিজিটর ছাড়া অন্য কাউকে হাসপাতালে প্রবেশ করতে না দেওয়া। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্য পুলিশের সহযোগিতা নেওয়া।

৪. সেবা প্রদানে অবহেলা বা অসঙ্গতি দেখা দিলে অভিযোগ দায়ের করা। আইন নিজের হাতে না তুলে নেওয়া এবং সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলা নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তিনি ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা উচিত এবং হামলাকারীদের উপযুক্ত বিচার করা প্রয়োজন।

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীদের একজনকে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, মাল্টি অরগান ফেইলিওর রোগীর অবস্থা গুরুতর ছিল এবং চিকিৎসকরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন।

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস টেকনোলজির (বিইউবিটি) শিক্ষার্থী আহসানুল হক দীপ্তর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হামলার ঘটনা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।