সব সরকারি কর্মচারীকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন নির্দেশনা এসেছে, যা অনুযায়ী তাদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এই নির্দেশনা জারি করেছে। রোববার, ১ সেপ্টেম্বর তারিখে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সংক্রান্ত তথ্য জানানো হয়েছে।

নির্দেশনার বিস্তারিত

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ জাকির হোসেনের মাধ্যমে জানানো হয়েছে যে, “সকল সরকারি কর্মচারীকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।” তবে, এই হিসাব জমা দেওয়ার নির্দিষ্ট সময়সীমা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।

দেশে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারী রয়েছেন। তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে এবং আচরণ বিধিমালার আওতায় এই নিয়ম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিধিমালা অনুসারে, সরকারি কর্মচারীদের প্রতি পাঁচ বছর পর পর সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। যদিও, গত চার দশকে এই নিয়ম পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। কিছু মন্ত্রণালয় তাদের অধীন কর্মচারীদের সম্পদের বিবরণী চেয়েও প্রয়োজনীয় সাড়া পায়নি।

আচরণ বিধিমালা ও বাস্তবায়ন

সরকারি কর্মচারীদের আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, তারা তাদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে সম্পদের হিসাব জমা দিতে বাধ্য। দেশে সরকারি চাকরিতে ২৬টি ক্যাডার রয়েছে এবং ক্যাডার কর্মকর্তারা তাদের নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ে নিয়ন্ত্রণ রাখেন। সম্পদের হিসাবও সেই মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া উচিত।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর এই নির্দেশনা আবারও সামনে এসেছে। এই বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দাখিল ও প্রকাশ সংক্রান্ত বিধিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। আদালত এই বিষয়ক অগ্রগতি প্রতিবেদন তিন মাসের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

হাইকোর্টের আদেশ

মঙ্গলবার, ২ জুলাই তারিখে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালত বলেছেন যে, দুর্নীতি উন্নয়ন ও সুশাসনের অন্তরায়, তাই এটি যে কোনো মূল্যে থামাতে হবে। জনগণকেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে এবং আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

রিট আবেদন

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দাখিল ও প্রকাশের নির্দেশনা নিয়ে একটি রিট আবেদন দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট দায়ের করেন। এতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, চাকরিতে প্রবেশের সময় কর্মচারীদের তাদের এবং পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন সম্পদের ঘোষণা দিতে হবে। এছাড়া, প্রতি পাঁচ বছর পর তাদের সম্পদের হ্রাস-বৃদ্ধির হিসাবও জমা দিতে হবে।

বর্তমানে, সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের হিসাব দাখিলের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই নির্দেশনা সরকারের সম্পদের স্বচ্ছতা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।