আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী তাঁর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন, যখন তাঁকে আয়নাঘরে আটক রাখা হয়েছিল। তিনি জানিয়েছেন, সাদা পোশাকের বিশেষ বাহিনী কিভাবে তাঁকে আটক করেছিল এবং আয়নাঘরে তাঁর অভিজ্ঞতা কেমন ছিল।
আয়নাঘরের অভিজ্ঞতা:
আযমী জানান, তাঁকে আটক করার সময় সাদা পোশাকের বাহিনী তাঁর পরিচয় জানতে চাইলে তারা কোনো উত্তর দেয়নি। এমনকি তাঁকে খুব খারাপভাবে আচরণ করা হয়। তাঁকে চোখ বেঁধে গ্রেফতার করে একটি গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর পরিবারের ওপর কীভাবে অত্যাচার করা হয়েছে, তাও তিনি বর্ণনা করেছেন। তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ওপর নির্যাতনের কথা উল্লেখ করেছেন।
জাতীয় সংগীত ও সংবিধান পরিবর্তনের দাবি:
ব্রিগেডিয়ার আযমী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন যে, বর্তমান জাতীয় সংগীতটি ভারত দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল এবং দুই বাংলাকে একত্রিত করার জন্য করা হয়েছিল। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, তাই তাঁর মতে, জাতীয় সংগীত নতুনভাবে লেখা উচিত।
তিনি বর্তমান সংবিধানকেও বৈধ মনে করেন না। তাঁর মতে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম শেষে কোনো নতুন সংবিধান তৈরি করা হয়নি এবং বর্তমান সংবিধান জনগণের প্রতিনিধি নয়। তাই তিনি নতুন একটি সংবিধান প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক:
ব্রিগেডিয়ার আযমী মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান জরিপ ছাড়া শহীদের সংখ্যা প্রকাশ করেছিলেন। তাঁরা ৩ লাখকে ৩০ লাখ বলে ঘোষণা করেছিলেন, বাস্তবে শহীদের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৮৬ হাজার। তাঁর মতে, জনগণের কাছে সঠিক তথ্য তুলে ধরা উচিত।
আয়নাঘরে আট বছরের বন্দিত্ব:
ব্রিগেডিয়ার আযমী জানান, তিনি আট বছর ধরে আয়নাঘরে বন্দি ছিলেন। এই সময়ে তিনি পৃথিবীর আলো দেখতে পাননি, এবং তাঁকে নানান ধরনের নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। আট বছর পর ৫ আগস্ট মুক্তি পেয়ে তিনি তাঁর পরিবারের কাছে ফিরে আসেন।
সংবাদ সম্মেলনে দাবিসমূহ:
ব্রিগেডিয়ার আযমী সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের মেজো ছেলে হিসেবে তাঁর পরিবারের ওপর নির্যাতনের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। এছাড়া, তিনি দেশবাসীকে সঠিক ইতিহাস জানিয়ে নতুন জাতীয় সংগীত ও সংবিধান প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন।