ডেঙ্গুর কারণে দেশে ৭ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৭৪৫ এর বেশি

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo

ডেঙ্গু আমাদের দেশে একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই রোগে আক্রান্ত হয়ে আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে, যা চলতি বছরে একদিনে সর্বাধিক। আমাদের জন্য এটি খুবই চিন্তার বিষয়। চলুন, আমরা জানি ডেঙ্গু সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং কীভাবে আমরা নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারি।

ডেঙ্গুর বর্তমান পরিস্থিতি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত সাতজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এই সময়ের মধ্যে আরও ৮৬০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শুধু তাই নয়, গত এক বছরে মোট ১৫০ জন মারা গেছেন, যা উদ্বেগজনক।

হাসপাতালে ভর্তি হওয়া নতুন রোগীদের মধ্যে:

  • বরিশাল বিভাগে: ১০১ জন
  • চট্টগ্রাম বিভাগে: ১৬৪ জন
  • ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে): ১০৯ জন
  • ঢাকা উত্তর সিটিতে: ১৯৫ জন
  • ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে: ১৮১ জন
  • খুলনা বিভাগে: ৫৩ জন
  • রাজশাহী বিভাগে: ২ জন
  • ময়মনসিংহ বিভাগে: ৩২ জন
  • সিলেট বিভাগে: ৬ জন
  • রংপুর বিভাগে: ১৭ জন

এদিকে, গত এক দিনে দেশে ৬২১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। চলতি বছর এ পর্যন্ত ২৫ হাজার ২৪১ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।

কেন ডেঙ্গু হচ্ছে?

ডেঙ্গু রোগটি এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। সাধারণত বর্ষার সময় এ মশাগুলো বেশি দেখা যায়। যখন পানি জমে যায়, তখন মশার প্রজনন বৃদ্ধি পায়। এর ফলে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বাড়তে থাকে।

ডেঙ্গুর লক্ষণ

ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে কিছু সাধারণ লক্ষণ দেখা দেয়, যেমন:

  • উচ্চ তাপমাত্রা
  • শরীরের ব্যথা
  • মাথাব্যথা
  • মাংসপেশিতে ব্যথা
  • র‌্যাশ (চর্মরোগ)

যদি আপনার মধ্যে এই লক্ষণগুলো দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

আমাদের কী করা উচিত?

ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে:

  1. পরিষ্কার রাখা: বাড়ির আশেপাশে জল জমতে না দেওয়া।
  2. মশার দাঁড়ানো: মশারি ব্যবহার করা এবং মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়া।
  3. বাগানে যত্ন: ফুলের টবে জমে থাকা পানি ফেলে দেওয়া।
  4. সঠিক চিকিৎসা: যদি কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

চিকিৎসা ও প্রতিকার

ডেঙ্গুর জন্য কোনো বিশেষ চিকিৎসা নেই, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু মেডিসিন নেওয়া যেতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো হাইড্রেশন বজায় রাখা। বেশি করে পানি পান করতে হবে এবং বিশ্রাম নিতে হবে।

সামাজিক সচেতনতা

ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের সবার ভূমিকা রয়েছে। সামাজিকভাবে সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমাদের আশেপাশের মানুষদের এই রোগ সম্পর্কে জানাতে হবে এবং সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য উৎসাহিত করতে হবে।

শেষ কথা

ডেঙ্গু আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের সজাগ থাকতে হবে এবং যথাসম্ভব সচেতনতা বাড়াতে হবে। সবাই মিলে চেষ্টা করলে এই রোগের বিস্তার রোধ করা সম্ভব। তাই নিজেদের ও পরিবারের সুরক্ষার জন্য সচেতনতা এবং সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।