হোন্ডার বাইক মানেই আলাদা এক উন্মাদনা। নব্বইয়ের দশক থেকে আজও তরুণদের জন্য হোন্ডা বাইক একটি প্রথম পছন্দ। এই সংস্থা প্রতি বছর একের পর এক নতুন বাইক বাজারে নিয়ে আসে। এবার হোন্ডা নিয়ে এসেছে নতুন আপডেটেড বাইক, ২০২৪ হোন্ডা সিবিআর ১০০০আরআর-আর ফায়ারব্লেড।
নতুন আপডেট ও ফিচার
বিশ্ব বাজারে খুবই জনপ্রিয় হোন্ডা ফায়ারব্লেড এবার এসপি ভ্যারিয়েন্টের নতুন আপডেট নিয়ে এসেছে। এটি হোন্ডার প্রথম বাইক যেখানে “টু মোটর থ্রটল বাই ওয়্যার” সিস্টেম রয়েছে। এই সিস্টেমের মাধ্যমে থ্রটল ভালভ খোলা ও বন্ধ করা হয়, যা বাইকের নিয়ন্ত্রণকে আরও উন্নত করে।
হোন্ডার দাবি, এই বাইক মাঝারি গতিতে দ্রুত ত্বরান্বিত হয় এবং কম থ্রটলে ভালো নিয়ন্ত্রণ পাওয়া যায়। এর ইঞ্জিন ব্রেকিংও উন্নত।
বাইকের লুক ও ডিজাইন
হোন্ডা সিবিআর ১০০০আরআর-এর ডিজাইন খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। তবে নতুন ডিজাইনের উইংলেট যুক্ত হয়েছে, যা বাইকের স্পোর্টি লুক ও অ্যারোডাইনামিককে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। বেস মডেলে কালো রঙের ইউএসডি সাসপেনশন রয়েছে, আর এসপি ভ্যারিয়েন্টে রয়েছে গোল্ডেন ইউএসডি সাসপেনশন।
ইঞ্জিনের বিশদ
দুটি ভ্যারিয়েন্টেই ৯৯৯ সিসি লিকুইড কুলড ৪ ভালভ ৪ সিলিন্ডার ইঞ্জিন রয়েছে, যা ২১৮ হর্সপাওয়ার এবং ১১৩ এনএম টর্ক উৎপন্ন করতে সক্ষম। সঙ্গে ৬ স্পিড গিয়ারবক্স রয়েছে। বাইকের মাইলেজ ১৫.৪ কিমি প্রতি লিটার এবং কার্ব ওজন ২০০ কেজি।
গতি ও নিরাপত্তা
হোন্ডা সিবিআর ১০০০আরআর-এর সর্বোচ্চ গতি ২৯৯ কিমি প্রতি ঘণ্টা। এটি ০ থেকে ১০০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতি তোলার জন্য সময় নেয় মাত্র ২.৯ সেকেন্ড। বাইকের সামনে দুটি ডিস্ক ব্রেক এবং পিছনে একটি সিঙ্গেল ডিস্ক ব্রেক রয়েছে, যার সঙ্গে ডুয়াল চ্যানেল অ্যান্টি লক ব্রেক সিস্টেমও রয়েছে। ফুয়েল ট্যাংকের ক্যাপাসিটি ১৬.১ লিটার।
ফিচারসমূহ
বাইকে রয়েছে ডিজিটাল ইনস্ট্রুমেন্ট কনসোল, এলইডি লাইটিং, এবিএস লাইট, এবং ইউএসবি চার্জিং পোর্ট। এর ডিজিটাল কনসোলটি স্পিডোমিটার, ওডোমিটার, ট্রিপমিটার, ও টেকোমিটার দেখায়। এই ফিচারগুলি বাইকটি ব্যবহারে সহজ এবং সুবিধাজনক করে তোলে।
দাম ও বাজারের অবস্থা
এই বাইক আপাতত জাপানের বাজারে লঞ্চ হয়েছে এবং এর দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ১৫ লাখ টাকারও বেশি। হোন্ডার অন্যান্য মডেলগুলোর মধ্যে অ্যাক্টিভা অন্যতম জনপ্রিয় স্কুটার। এই স্কুটারটি সাশ্রয়ী দাম, আরামদায়ক রাইডিং এবং ভালো জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য বিখ্যাত।
সাক্সেসের গল্প
হোন্ডা অ্যাক্টিভা ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে ২ লাখ ২৭ হাজার ৪৫৮ ইউনিট বিক্রি হয়েছে। গত বছর একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ২ লাখ ১৪ হাজার ৮৭২ ইউনিট। এর মধ্যে হোন্ডা অ্যাক্টিভার বিক্রি বাড়ার অন্যতম কারণ হলো এর সাশ্রয়ী দাম এবং দক্ষ সার্ভিস নেটওয়ার্ক।
অন্যান্য স্কুটারের অবস্থা
হোন্ডা অ্যাক্টিভার পর দ্বিতীয় স্থানে আছে টিভিএস জুপিটার, যা ৮৯,৩২৭ ইউনিট বিক্রি হয়েছে। এছাড়া সুজুকি অ্যাক্সেস স্কুটারও বিক্রির ক্ষেত্রে ভালো অবস্থানে রয়েছে, যার বিক্রি আগস্টে ৬২,৪৩৩ ইউনিটে পৌঁছেছে।
হোন্ডা ফায়ারব্লেড এবং অ্যাক্টিভা উভয়ই তরুণদের মাঝে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। নতুন আপডেটেড ফিচার ও স্টাইলের কারণে বাইকটি কেবল মাত্র সড়কে নয়, বাইকপ্রেমীদের হৃদয়ে জায়গা করে নেবে।
হোন্ডা সিবিআর ১০০০আরআর-আর ফায়ারব্লেড নতুন লুক এবং আধুনিক প্রযুক্তির কারণে বাইকপ্রেমীদের মনে বিশেষ জায়গা করে নিবে। এটি কেবল একটি বাইক নয়, বরং একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন।