বর্তমানে আমাদের দেশে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে আদার দাম নিয়ে আলোচনা অনেক বেড়ে গেছে। আড়ত থেকে খুচরা বাজারে আদার দাম প্রায় ৮৫ টাকা বা ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে রাজধানীর শ্যামবাজারে আদার দাম ১৩০-১৫৫ টাকা কেজি থেকে শুরু হয়ে খুচরা বাজারে ২২০-২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।

আড়ত ও খুচরা বাজারের দামের পার্থক্য

শুধু রাজধানী নয়, দেশের বিভিন্ন বাজারে আদার দাম ক্রমাগত বাড়ছে। যেখানে আড়তে আদার দাম ১৩০-১৫৫ টাকা, সেখানে খুচরা বাজারে এটি ২২০-২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ব্যাপারে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, সরকার থেকে নির্দিষ্ট লাভের পরিমাণ জানানো হয়নি, ফলে তারা খরচ ও লাভের উপর ভিত্তি করে দাম নির্ধারণ করছেন। জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেছেন, কৃষি বিপণন আইন অনুযায়ী আড়ত থেকে খুচরা পর্যায়ে লাভের সীমা নির্ধারণ করা উচিত।

রমজানে আদার চাহিদা বাড়ছে

রমজান মাস আসতে চলেছে, এবং এ সময় আদার ব্যবহার সাধারণত দ্বিগুণ বেড়ে যায়। ইফতারে আদা ছাড়া অনেক খাবার কল্পনা করা যায় না। এ কারণে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ার আশঙ্কা করছেন। শ্যামবাজারের আড়তদার মাজেদ জানিয়েছেন, বর্ষাকালে আদার দাম বেড়ে যায়, তবে বর্তমানে দাম কিছুটা কমেছে।

বিদেশি আদার প্রভাব

দেশে বিভিন্ন দেশের আদা আমদানি হয়, তবে চীনা আদার চাহিদা বেশি। সোহেল নামে একজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, দেশে চীনা আদার সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে দাম বাড়তে পারে। এছাড়া, ভারতীয় ও অন্যান্য দেশের আদার দামও তুলনামূলক বেশি।

খুচরা বাজারে দাম বৃদ্ধি

খুচরা বাজারে আদার দাম ২৫০ টাকাও হতে দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন বাজারে বিক্রেতারা জানান, দেশে আদার সরবরাহ তুলনামূলক কম, ফলে দাম বেড়ে গেছে। সম্প্রতি, মালিবাগ, মগবাজার, ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশে দেশি আদার সরবরাহ কমে গেছে, ফলে ক্রেতাদের আমদানিকৃত আদা কিনতে হচ্ছে।

পেঁয়াজ ও রসুনের দাম

আদার পাশাপাশি পেঁয়াজ ও রসুনের দামও বেড়ে গেছে। দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম ৬০-৭০ টাকা এবং রসুনের দাম ১৫০-১৮০ টাকার মধ্যে রয়েছে। ঈদুল ফিতরের পর এই সবজির দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে সরবরাহের ঘাটতি অন্যতম কারণ।

ভোক্তাদের জন্য সুপারিশ

এ পরিস্থিতিতে, ভোক্তাদের জন্য কিছু সুপারিশ রয়েছে:

  • স্থানীয় বাজার থেকে কেনা: দেশি পণ্য কেনার চেষ্টা করুন।
  • শুল্ক ও করের বিষয়: সরকারের নীতি নির্ধারণের দিকে নজর দিন যাতে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দাম না রাখেন।
  • ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ: বাজারে দামের পরিবর্তনের বিষয়ে সচেতন থাকুন এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলুন।

আদার বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি ভোক্তাদের জন্য উদ্বেগজনক। সরকার এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটি সঠিক নীতিমালা কার্যকর করা উচিত যাতে ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষা হয়। আশা করা যায়, বাজারে যদি সরবরাহ বৃদ্ধি পায় এবং মূল্য স্থিতিশীল থাকে, তাহলে ভোক্তাদের চাপ কিছুটা কমবে।