সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, COVID-19 এর পূর্ববর্তী সংক্রমণ হৃদরোগ, স্ট্রোক বা মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক এবং দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালিত এই গবেষণায়, করোনা ভাইরাসের পরীক্ষায় ইতিবাচক ফল পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে হৃদরোগের ঘটনাগুলি দ্বিগুণ হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে, বিশেষ করে যারা আগে কোনো হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন না, তাদের মধ্যেও এমন দেখা গেছে।

গবেষণার তথ্য

গবেষণায় ৫০ বছর এবং তার উপরের ১০,০০৫ জন COVID-19 আক্রান্ত ব্যক্তি এবং ২১৭,৭৩০ জন অ-আক্রান্ত ব্যক্তির তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই ডেটা ইউকে বায়োব্যাঙ্ক থেকে সংগৃহীত হয়েছে, যা ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল।

হৃদরোগের ঝুঁকি

গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন, COVID-19 এ আক্রান্ত ব্যক্তির প্রথম বছরের পরেই হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় এবং এই ঝুঁকি তিন বছর ধরে একইভাবে রয়ে যায়। ডাঃ স্ট্যানলি হেজেন, গবেষণার সহ-লেখক, জানিয়েছেন যে COVID-19 সংক্রমণ মানুষকে সময়ের সাথে সাথে হৃদরোগের জন্য বিপজ্জনক করে তোলে।

যাদের COVID-19 এর গুরুতর উপসর্গ ছিল, তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি হালকা উপসর্গ ব্যক্তিদের তাদের তুলনায় কিছুটা বেশি।

রক্তের গ্রুপের প্রভাব

গবেষণায় দেখা গেছে, রক্তের গ্রুপও ঝুঁকিতে ভূমিকা রাখে। যারা O গ্রুপের বাইরে (যেমন A, B বা AB) তাদের জন্য হৃদরোগের ঝুঁকি O গ্রুপের মানুষের তুলনায় দ্বিগুণ। এটি বেশ উদ্বেগজনক, কারণ বিশ্ব জনসংখ্যার ৬০% এর বেশি মানুষের রক্তের গ্রুপ O এর বাইরে।

স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের জন্য সুপারিশ

গবেষকদের মতে, চিকিৎসকদের COVID-19 কে হৃদরোগের ঝুঁকি ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। হৃদরোগ বিশ্বের সর্বাধিক মৃত্যুর কারণ, তাই COVID-19 এর প্রভাবকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া প্রয়োজন।

পূর্বের রোগীদের জন্য নির্দেশনা

গবেষকরা বৃদ্ধ বয়সীদের, বিশেষ করে যারা COVID-19 এ আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর জন্য পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য সচেতনতা, রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল পরীক্ষা করা এবং ব্যায়ামের অভ্যাস করা জরুরি।

আরও গবেষণার প্রয়োজন

এই গবেষণার কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং গবেষকরা মনে করেন, COVID-19 এর হৃদরোগে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সম্পর্কে আরও গবেষণার প্রয়োজন। তারা বিশ্বাস করেন, COVID-19 মানবদেহের হৃদরোগের সাথে সম্পর্কিত জটিলতার কারণ হতে পারে।

সার্বিকভাবে, COVID-19 এর পূর্ববর্তী সংক্রমণ হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, এবং এজন্য আমাদের আরও সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।