লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক… এই বাক্যটি ইসলামিক বিশ্বাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি “লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক পুরো দোয়া” নামে পরিচিত, যা হজ ও ওমরা পালনের সময় উচ্চারণ করা হয়। তালবিয়া আল্লাহর একত্ববাদ এবং তাঁর প্রতি আনুগত্যের চিহ্ন।

তালবিয়ার গুরুত্ব

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তালবিয়াতে স্বর উঁচু করার জন্য জিবরাইল (আ.) আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন।” এটি হজের বিশেষ শ্লোগান হিসেবে আমাদের ধর্মীয় জীবনে একটি শক্তিশালী স্থান দখল করে।

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, “অমুকের ওপর আল্লাহর অভিশাপ! তারা ইচ্ছা করে হজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনের শোভা মিটিয়ে দিল। আর নিশ্চয় হজের শোভা হল তালবিয়া।” এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, তালবিয়া হজের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।

কখন তালবিয়া পাঠ করতে হবে

হাজিরা হজের ইহরাম বাঁধার সময় থেকে জামরাতুল ‘আকাবায় কঙ্কর নিক্ষেপের আগ পর্যন্ত “লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক পুরো দোয়া” পাঠ করবেন। কঙ্কর নিক্ষেপের আগ মুহূর্তে তালবিয়া বন্ধ করতে হবে। ওমরা পালনকারীরা ইহরাম বাঁধার পর থেকে এটি শুরু করবেন এবং বায়তুল্লায় তাওয়াফের আগে এটি বন্ধ করবেন।

লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক পুরো দোয়া উচ্চারণ ও অর্থ

তালবিয়া হলো:

لَبَّيْكَ اَللَّهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لا شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ، لا شَرِيْكَ لَكَ।

উচ্চারণ: “লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।”

অর্থ: “আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি, হে আল্লাহ! আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি। আপনার কোন শরীক নেই। নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা, নে‘মত এবং সাম্রাজ্য আপনারই।”

তালবিয়ার প্রভাব

তালবিয়া আমাদের একত্রিত করে এবং আমাদের অন্তরে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও আনুগত্য প্রকাশ করে। যখন আমরা একসাথে এটি পাঠ করি, তখন তা আমাদের হৃদয়ে শান্তি ও আত্মিক উন্নতি নিয়ে আসে।

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, “তালবিয়া পুরোটা পাঠ করতে হয়। কিছু অংশ ছেড়ে দেওয়া মাকরূহ।” তাই আমাদের তালবিয়া সম্পূর্ণভাবে পাঠ করা উচিত।

উপসংহার

লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক পুরো দোয়া আমাদের হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও আনুগত্যের প্রতীক। এটি আমাদেরকে একত্রিত করে এবং আমাদের আত্মাকে আল্লাহর নিকট নিবেদিত করে। তাই আমরা হজ ও ওমরা পালনকালে তালবিয়া পাঠের প্রতি গুরুত্ব দেব।