অনেকদিন ধরে আমাদের দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স নিয়ে আলোচনা চলছে। বর্তমানে, পুরুষদের জন্য চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়স ৩০ বছর এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩২ বছর। কিন্তু, চাকরির জন্য আবেদন করতে আগ্রহী অনেক তরুণ-তরুণী মনে করেন, বয়স সীমা বাড়ানো উচিত। তাদের দাবি ৩৫ বছর করা হোক।

সম্প্রতি, কয়েকশ চাকরিপ্রত্যাশী যুবক-যুবতী প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নিয়ে নিজেদের দাবি জানান। তারা সরকারের কাছে একটি প্রজ্ঞাপন জারির জন্য আন্দোলন করছেন যাতে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করা হয়। গত ৩০ সেপ্টেম্বর সরকার একটি কমিটি গঠন করেছে এই বিষয়ে আলোচনা করার জন্য। কমিটির প্রধান হলেন আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, যিনি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান।

আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী জানান, তারা পুরুষদের জন্য ৩৫ বছর এবং নারীদের জন্য ৩৭ বছর বয়স সীমা বাড়ানোর সুপারিশ করেছেন। তারা বলেন, নারীদের বয়স বেশি করার কারণ হল, তারা বিভিন্ন সামাজিক ও পারিবারিক বাধার কারণে একই বয়সে পরীক্ষায় বসতে পারেন না। তাই, নারীদের চাকরিতে আসার সুযোগ বাড়ানোর জন্য এ পদক্ষেপটি নেওয়া হয়েছে।

সরকারি সূত্র থেকে জানা গেছে, শিগগিরই চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর ঘোষণা আসবে। এই বিষয়ে প্রতিবেদনও সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে, দেশের বিভিন্ন স্থানে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন হয়েছে।

এছাড়া, করোনার কারণে এবং সেশনজটের কারণে অনেক ছাত্র-ছাত্রী চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই, এই বিষয়টি মাথায় রেখে কমিটি সরকারকে সুপারিশ করেছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সরকারের এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে মনে করেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানো হলে অধিক সংখ্যক যুবক-যুবতী চাকরির সুযোগ পাবেন এবং দেশ উন্নত হবে।

আজ, ১৪ অক্টোবর, চাকরিপ্রত্যাশীরা শাহবাগে অবস্থান নিয়ে স্লোগান ও বক্তব্য দিয়ে তাদের দাবি জানাচ্ছেন। তারা আশা করছেন, সরকারের সিদ্ধান্ত দ্রুত আসবে এবং তাদের প্রজ্ঞাপন জারি হবে।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, যদি তাদের দাবি মেনে না নেওয়া হয়, তবে তারা লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আজকের আন্দোলনে তারা জানিয়েছেন, তাদের দাবি যৌক্তিক। তাই, সরকারের উচিত দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করা।

সারাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর দাবি প্রায় একযুগের। অনেকেই মনে করছেন, এই সমস্যা সমাধান হলে শিক্ষিত যুবকরা চাকরি পেয়ে নিজের জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবেন।

অতএব, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটি শুধু চাকরিপ্রার্থীদের জন্যই নয়, দেশের উন্নতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

তাহলে, আসুন আমরা সবাই এই আন্দোলনে একযোগে সমর্থন জানাই এবং সরকারের সিদ্ধান্তের দিকে নজর রাখি। আশা করি, আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হবে এবং সকল যুবক-যুবতী চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ পাবেন।