গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ছয়জন মারা গেছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, নতুন করে এক হাজার ২৯৮ জন ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হয়েছেন। এতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪৭ জনে দাঁড়িয়েছে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯ হাজার ৮৮০ জন।

রোববার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ানো ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও এক হাজার ২৯৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মৃতদের মধ্যে চারজন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা, একজন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এবং একজন চট্টগ্রামের বাসিন্দা।

ডেঙ্গুর প্রকোপ আমাদের দেশের জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে বর্ষাকালে এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। আমাদের চারপাশে যখন বৃষ্টি হয়, তখন জল জমে এবং সেই পানিতে এডিস মশা জন্ম নেয়। এই মশা মানুষের শরীরে ঢুকে ডেঙ্গু জ্বর ছড়ায়। ডেঙ্গুর রোগী সাধারণত জ্বর, শরীর ব্যথা, মাথাব্যথা, এবং ত্বকে র‌্যাশের মতো উপসর্গ দেখান। এটি গুরুতর হলে, রোগীর অবস্থা খারাপ হতে পারে এবং জীবন সংকটেও পড়তে পারেন।

এখন আমরা কী করতে পারি যাতে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে পারি? প্রথমত, আমাদের আশেপাশে কোথাও জল জমতে দেওয়া যাবে না। যদি জল জমে যায়, তাহলে সেখানে মশা বেড়ে যাবে। তাই ঘর, বাড়ির উঠান, ফুলের টবে এবং অন্যান্য জায়গায় জমে থাকা জল আমাদের পরিষ্কার রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, প্রতিদিন ঘর থেকে বের হওয়ার আগে মশারীর ব্যবহার করা উচিত। এইভাবে আমরা নিজেদের রক্ষা করতে পারব।

ডেঙ্গুর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কিছু পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গুর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্বও রয়েছে। যদি আমরা আমাদের আশেপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখি এবং সচেতন থাকি, তাহলে ডেঙ্গুর মতো রোগগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব।

এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি হওয়ার পেছনে কিছু কারণ রয়েছে। যেমন, গত বছরের তুলনায় এবার বর্ষা একটু বেশি দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে। তাই এডিস মশার সংখ্যা বেড়ে গেছে। তাই আমাদের উচিত, এই বিষয়ে আরও সচেতন থাকা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেওয়া নির্দেশনা মেনে চলা।

এখন আমাদের উচিত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য সচেতনতা তৈরি করা। আমাদের বন্ধু এবং পরিবারকে এই বিষয়ে জানান। তারা যেন নিজেদের এবং আশেপাশের মানুষদের রক্ষা করতে সচেতন হন।

আমরা সবাই যদি একসঙ্গে কাজ করি, তাহলে ডেঙ্গুর মতো রোগগুলো আমাদের পেছনে আসতে পারবে না। এটি আমাদের স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদের দেশের জন্য স্বাস্থ্য সচেতনতা খুবই জরুরি। ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে আমাদের উচিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, খাবারের স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি অবলম্বন করা এবং মশার উপদ্রব থেকে নিজেদের রক্ষা করা।

যতটা সম্ভব আমরা যেন আমাদের পরিবার এবং সমাজের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করি। তাহলে আমরা সবাই সুস্থ ও নিরাপদ থাকতে পারব।