ঢাকা, ২০ অক্টোবর: এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে ‘বৈষম্যহীন’ভাবে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের দাবিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সামনে একদল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করেছে। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।

অধ্যাপক তপন কুমার সরকার জানিয়েছেন, আগামীকাল সোমবার তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

আজ রোববার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ঢাকা শিক্ষা বোর্ড প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে বিক্ষোভ ও অবরোধ করেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের ওপর হামলা হয়েছে এবং এ ঘটনায় কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। অপরদিকে, বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেছেন, কিছু শিক্ষার্থী ভবনের ভেতরে ঢুকে চেয়ারম্যানের কক্ষে ভাঙচুর চালিয়েছেন।

এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষা ৩০ জুন শুরু হয়। সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের কারণে পরীক্ষা কয়েক দফা স্থগিত হয়। এই পরিস্থিতিতে ১৫ অক্টোবর এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়, যেখানে স্থগিত বিষয়গুলোর মূল্যায়ন এসএসসি পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, যে ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, তা বৈষম্যমূলক। তাঁদের মতে, সব বিষয়ের ওপর ‘ম্যাপিং’ করে নতুন করে ফলাফল প্রকাশ করতে হবে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সামনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ তাদের বাধা দিতে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, এই ফলাফল বাতিল করে বৈষম্যহীনভাবে ফলাফল প্রকাশের দাবি জানিয়ে তাঁরা বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করতে চান। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, তাঁদের দাবি আদায়ে তাঁরা শেষ পর্যন্ত অবস্থান নেবেন।

এদিকে, শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে ফলাফল প্রকাশের কথা জানিয়ে অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেছেন, বর্তমানে কিছু করার সম্ভব নয়। তাঁর পদত্যাগের ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা বোর্ডের সামনে অবস্থান চালিয়ে যায়।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণে সনদ ও নম্বরপত্রের জন্য আসা মানুষজন ভোগান্তিতে পড়েন। ময়মনসিংহে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ শুরু করেন, যেখানে তাঁরা সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে গরমিল করে ফলাফল তৈরি হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।

শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবু তাহের জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের দেওয়া স্মারকলিপি আন্তবোর্ডে পাঠানো হবে এবং যদি তাঁদের কোনো ক্ষতি হয়ে থাকে, তবে তা পুনরায় পর্যালোচনা করা হবে।

এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে, যা আগামীদিনে শিক্ষাব্যবস্থায় প্রভাব ফেলতে পারে।