বিএনপির সহআন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় এক আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি সেখানে বলেন, ১৯৭৫ সালের পর দেশের মানুষ যেভাবে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল, তেমনিভাবে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর ঘরে ঘরে মানুষ মুক্তি পেয়েছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, দেশের মানুষের মধ্যে এখনও ষড়যন্ত্রের আভাস রয়েছে এবং ভোটের কোন নিশানা দেখা যাচ্ছে না।

২০ অক্টোবর বিকেলে শাহবাজপুর প্রথম গেট এলাকায় তার প্রয়াত পিতা ভাষাসৈনিক অলি আহাদের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রুমিন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে। বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের গুম-খুনের ঘটনা ঘটেছে এবং পুলিশ দিয়ে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, গত জুলাই মাসে ছাত্র আন্দোলনের কারণে শেখ হাসিনা ভারতে পালাতে বাধ্য হন এবং এখন আওয়ামী লীগের বড় নেতাদেরও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এদেশের মানুষ সব সময় ভোটের জন্য আন্দোলন করেছে এবং বারবার রক্ত দিয়েছে। মানুষকে ধৈর্যের পরীক্ষা না নিয়ে দ্রুত ভোট দেওয়ার সুযোগ তৈরি করতে হবে। রুমিন বলেন, “বিএনপি আর কোনোদিন এ দেশে বিনা ভোটের সরকার আসতে দেবে না।”

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুনাম এবং ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে রুমিন বলেন, এই অঞ্চলের কৃতি সন্তানদের মধ্যে তাক লাগানো সব সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জনগণ যদি তাদের সমর্থন দেয় তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয়টি আসনে নতুন, শক্তিশালী এবং প্রতিভাবান এমপি তৈরি করতে পারবেন।

সভায় ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র দাসও বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতন ঘটলেও তাদের দোসররা প্রশাসনের বিভিন্ন স্থানে এখনও সক্রিয় রয়েছে। তাদের দ্রুত অপসারণ করা না হলে গণঅভ্যুত্থানের সুফল জনগণ পাবে না।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি। সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকন, সাবেক সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মঞ্জু, এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সভা শেষে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের নেতা প্রয়াত অলি আহাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া পরিচালনা করা হয়।

এভাবে, সভায় বক্তারা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন এবং জনগণের ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের আহ্বান জানান।