ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ টিকা নেওয়ার পর এক বিদ্যালয়ের ৬০ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটেছে পক্ষিয়া ইউনিয়নের জ্ঞানদা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। সহকারী শিক্ষক মো. নোমান জানিয়েছেন, অসুস্থ শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাঁচজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এই টিকার প্রয়োগের পর কিছুক্ষণ যেতে না যেতেই শিক্ষার্থীদের অসুস্থ হওয়ার ঘটনা ঘটে। অসুস্থ শিক্ষার্থীরা বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। ভর্তি হওয়া পাঁচজনের মধ্যে সপ্তম শ্রেণির খাদিজা ইসলাম, তামান্না ও রাফিয়া আখতার, অষ্টম শ্রেণির মিতু বেগম এবং ষষ্ঠ শ্রেণির মারিয়া আখতার উল্লেখযোগ্য।

ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসক নাহিদ সুলতানা জানিয়েছেন, টিকার প্রভাবে শিক্ষার্থীরা কিছুটা ভয় পেয়ে গেছে, তবে তারা এখন সুস্থ রয়েছেন। শিক্ষক নোমান জানান, সকালবেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী মেয়েদের জন্য জরায়ুমুখ ক্যান্সারের টিকা প্রদান করা হয়। টিকা নেওয়ার কিছু সময় পরই অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা তাৎক্ষণিকভাবে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে গেছে, তবে যারা গুরুতর অসুস্থ, তাদের চিকিৎসা ভোলা সদর হাসপাতালে চলছে।

সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের প্রতিরোধে হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাসের (এইচপিভি) টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। ঢাকা বাদে সাতটি বিভাগে ৬২ লাখ কিশোরীকে এই টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৪ অক্টোবর থেকে পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রীদের পাশাপাশি স্কুলের বাইরে থাকা ১০ থেকে ১৪ বছরের কিশোরীদের বিনামূল্যে এই টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে।

এই কার্যক্রমটি দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (গ্যাভি), ইউনিসেফ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) সহযোগিতায় পরিচালিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের জন্য এই টিকার গুরুত্ব অপরিসীম, তবে অসুস্থ হওয়ার ঘটনায় অভিভাবক এবং স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এই উদ্যোগে সঠিক চিকিৎসা ও মনোবল বৃদ্ধির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।