[]
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (জবিশিস) কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন আওয়ামীপন্থী শিক্ষক সংগঠন ব্লু পার্টি বর্জন করে এবং বিএনপি-জামায়াত-জামায়াতপন্থী শিক্ষক সংগঠন সাদা পার্টির প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (জবিশিস) ২০২৫ সালের কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামীপন্থী শিক্ষক সংগঠন নীল দল। ১৪ বছর পর বিএনপি ও জামায়াতপন্থী শিক্ষক সংগঠন সাদা দলের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল আলীম শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন 05 এর ফলাফল ঘোষণা করেছেন।
ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোশাররফ হোসেন সভাপতি ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মোঃ রইছ উদ্দিন।
সহ-সভাপতি পদে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আজম খান, কোষাধ্যক্ষ পদে মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মো. ইমরানুল হক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসেন নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়া সদস্য হিসেবে অর্থ বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ রফিকুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নূরুল্লাহ, অর্থ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ ওমর ফারুক, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আবু লাইক, সমাজকর্ম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মনফিজ আহমেদ, ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাছির আহমদ এবং ইসলামিক স্টাডিজের সহকারী অধ্যাপক তারেক বিন আতিক নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ কুতুব উদ্দিন, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জমির হোসেন, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রুমানা তাছমিন এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ আনিসুর রহমান।
এদিকে হুমকি-ধমকির অভিযোগ তুলে আসন্ন শিক্ষক সমিতি নির্বাচন-২০২৫ বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীলদল।
নীল দলের শিক্ষক নেতারা বলছেন, যে কোনো সভ্য সমাজে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রতিনিধি নির্বাচন বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের প্রথম ধাপ। শিক্ষকদের এই সংগঠনকে অকার্যকর করার জন্য যারা চিঠি ও হুমকি দিয়েছেন, তারা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাস করেন না।
নির্বাচন কমিশনারের কাছে এক চিঠিতে নীল দলের শিক্ষক নেতারা বলেন, ২০১২ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জাভিশিস) প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিবছর গণতান্ত্রিকভাবে পেশাদার সংগঠন হিসেবে নির্বাচিত হয়ে অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে আসছে। এবং শিক্ষার সার্বিক উন্নতিতে শিক্ষকদের প্রতিনিধি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে
এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতি বছরের মতো এবারও সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন শিক্ষকরা। মনোনয়ন ফরম উত্তোলন ও জমা দেওয়ার সময় ৮ ডিসেম্বর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কয়েকজন শিক্ষার্থী এসে শিক্ষকদের একটি বড় অংশকে (বিশেষ করে নীলদলের শিক্ষকদের) হুমকি ও চাপ দিয়ে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দেয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন) মনোনয়ন ফরম জমা না দেওয়া। .
শিক্ষার্থীদের চিঠিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, সহকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ, হতাশা এবং ভয় ছড়িয়েছে এবং একটি সামগ্রিক অস্থির পরিবেশ তৈরি করেছে। ক্যাম্পাসের এই অস্থিতিশীল পরিবেশে আমাদের নিজেদের সম্মান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি বিবেচনা করে আমরা নীল দলের শিক্ষকরা আসন্ন শিক্ষক সমিতি নির্বাচন-২০২৫ বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির কার্যকরী পরিষদ ২০২৫ সালের নির্বাচনে আওয়ামী আদর্শের কোনো শিক্ষককে অংশগ্রহণের সুযোগ না দিতে এবং মনোনয়নপত্র বিক্রি না করার জন্য নির্বাচন কমিশন ও উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের
বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে আবু বকর খান, মোঃ রাকিব, ফেরদৌস, মোঃ তানজিল, সিয়াম হোসেন অনিক কুমার দাস এই স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, জুলাই বিপ্লবে হাজারো প্রাণের বিনিময়ে আমরা ফ্যাসিবাদী হাসিনা ও তার বন্ধু আওয়ামী ভূতের নিপীড়ন থেকে মুক্তি পেয়েছি। আন্দোলনের সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যারা আওয়ামী আদর্শের অনুসারী, নীল দল প্রকাশ্যে আমাদের বিরোধিতা করেছিল। ৪ আগস্ট আন্দোলনকারীদের নাশকতাকারী ও জঙ্গি আখ্যা দিয়ে তারা প্রকাশ্যে শহীদ মিনারের পাদদেশে মানববন্ধন করে, কঠোর দমন ও হাসিনার সমর্থনের আহ্বান জানায়।
৩ আগস্ট রাতে অনেক শিক্ষক ফ্যাসিবাদী হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হত্যার পরিকল্পনায় অংশ নেন। ফলে পরের দিন আমাদের হিসাব বিভাগের সাজিদকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালালে শিক্ষকরা গুরুতর আহত হন। আমাদের বন্ধু অনিক, ফয়সাল, ফেরদৌস, সিয়াম, ইভান, মারুফ, বাপ্পী, মাহমুদ, সজীব, কাজী আহাদসহ আরও অনেকে আহত হয়। ওই শিক্ষকরা নূরনবী, সিয়াম, তুষারসহ অনেককে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
আরও বলা হয়, আওয়ামী পন্থী নীল দলের শিক্ষকদের আসন্ন শিক্ষক ইউনিয়ন নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া মানে জুলাই বিপ্লবের হাজার হাজার শহীদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা। দলের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী আদর্শের কাউকে জগন্নাথের কোনো নির্বাচন বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে দেওয়া হবে না।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি নির্বাচন-05 প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল আলীম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ভোটার সংখ্যা ৬৫৮। যে কেউ এসে ফরম উত্তোলন করতে পারবেন। কেউ নির্বাচন বয়কট করবে কি করবে না সেটা আমাদের চিন্তার বিষয় নয়।
[]
https://banglanewsbdhub.comnews/50498/The-elevtor-of-Bngbnhu-Hll-of-Nzrul-University-is-like--eth-trp%C%A0 >