আদালতে চত্বরে পুলিশ কর্মকর্তাকে কিল-ঘুষি – BanglaNewsBDHub.com |

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo



সিলেটে সাংবাদিক এটিএম তুরাব হত্যা মামলায় গ্রেফতার মহানগর পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সাদেক কাওসার দস্তগীরকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় উত্তেজিত জনতা তার ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা ‘দস্তগীরের ফাঁসি চাই’ স্লোগান দিতে থাকেন।

এদিন সাংবাদিক তুরাব হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ মুরসালিন পুলিশ কর্মকর্তা সাদেক কাওসারের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক আব্দুল মোমেন। ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের পুলিশ সুপার খালেদ-উজ-জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সাংবাদিক তুরাব হত্যা মামলার আসামি মহানগর পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাদেক কাওসার দস্তগীরকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এ প্রসঙ্গে বাদীর আইনজীবী আব্দুর রব বলেন, ‘সেদিনের ভিডিওতে পুলিশ কর্মকর্তা দস্তগীরকে কনস্টেবল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গুলি করতে দেখা গেছে। তার গুলিতে নিহত হন তুরাব। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা বলে আদালতকে জানানোর পাশাপাশি পুলিশ কর্মকর্তা সাদেক কাওসার দস্তগীর এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আর কারা জড়িত তা জানতে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তা আমলে নেন।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাদেক কাওসারকে আদালতের তৃতীয় তলায় নিয়ে গেলে কয়েকজন তাকে ঘুষি মারে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে আদালতে শুনানি শেষে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তৃতীয় তলা থেকে তুলে নিয়ে গেলে সাদেক কাউসারকে হত্যা করা হয়। পরে তাকে আদালত চত্বর থেকে নিরাপত্তায় পিবিআই সিলেট কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

ঘটনার দিনের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আন্দোলন চলাকালে 19 জুলাই দুপুর ২টার দিকে শহরের কোর্ট পয়েন্টে বিএনপির মিছিলে পিছন থেকে পুলিশ গুলি চালাচ্ছে। এ সময় সাদা পোশাক পরা সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাদেক কাওছার দস্তগীর এক কনস্টেবলের হাত থেকে শুটারগান নিয়ে একের পর এক গুলি করতে থাকেন। পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত সাংবাদিক এটিএম তুরাব ওই দিন সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে তার শরীরে ৯৮টি স্প্লিন্টার পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ প্রথমে মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। তুরাবের ভাই থানায় গেলে পুলিশ তার মামলা নেয়নি।

জানা গেছে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত ৫ আগস্ট সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আবদুল মোমেনের আদালতে নিহতের ভাই আবুল হাসান বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। আজরাফ (সালাম)। মামলাটি কোতোয়ালি থানায় রেকর্ড করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (অপরাধ, উত্তর) মো. সাদেক কাওসার দস্তগীর, জেলা প্রশাসক (উত্তর) অতিরিক্ত ডিআইজি আজবাহার আলী শেখসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

ঘটনার পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (অপরাধ, উত্তর) মো. সাদেক কাওসার দস্তগীর, জেলা প্রশাসক (উত্তর) অতিরিক্ত ডিআইজি আজবাহার আলী শেখকে সিলেট থেকে বদলি করা হয়েছে।

আদালতের নির্দেশে গত ৮ অক্টোবর চাঞ্চল্যকর এ মামলার নথি পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ মুরসালিন তুরাব হত্যা মামলার অপর আসামি কনস্টেবল উজ্জল সিংকে ১৭ নভেম্বর রাতে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন তিনি ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শেরপুরের কর্মস্থল থেকে সাদেক কাওসার দস্তগীরকে গ্রেপ্তার করে পিবিআইয়ের একটি দল।

  • আদালতে স্কোয়ার
  • কিল-ঘুষি
  • পুলিশ অফিসার
  • মন্তব্য করুন

    আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।