নীলফামারীর সৈয়দপুরে তালাবদ্ধ ঘর থেকে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার গোয়ালপাড়া এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। গৃহবধূ শবনম আক্তার (২৮) উপজেলার হাতিখানা এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী ও দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার ভবানীপুর এলাকার আবদুর রহমানের মেয়ে।
শবনমের ছোট বোন রুস্কি আক্তার জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুলাভাই তাকে মোবাইল ফোনে বলেন, আমি তোমার বোনকে হত্যা করেছি। তুমি এসে লাশ নিয়ে যাও… আমি থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করব। সে ভেবেছিল এটা দুলাভাইয়ের পাগলামি। পরে তার দেওয়া ঠিকানায় গিয়ে ভাড়া বাসায় তালাবদ্ধ ঘরে বড় বোনের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, দেড় মাস আগে ফুচকা ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থেকেই বিয়ে হয় শবনমের। তার আগের বাড়িতে স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। সোমবার বিকেলে ওই দম্পতি গোয়ালপাড়া এলাকার আকতারি বেগমের একটি কক্ষ দুই হাজার টাকায় ভাড়া নেন। গভীর রাতে, প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া উভয়ের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক ও মারামারি শুনতে পায়। মঙ্গলবার রাতে ওই গৃহবধূর মা ও ছোট বোন এসে বিছানায় ব্যান্ডেজ বাঁধা লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে তালা ভেঙ্গে লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর থেকে স্বামী জাহাঙ্গীর পলাতক রয়েছে।
ওই গৃহবধূর মা ফারজানা বেগম জানান, বিয়ের পর থেকেই জাহাঙ্গীর তার মেয়েকে নানাভাবে নির্যাতন করতো। সম্প্রতি যৌতুকের জন্য চাপ দিলে তিনি একটি এনজিও থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে তাকে দেন। জাহাঙ্গীর ওই টাকা দিয়ে ব্যবসা না করে বিভিন্ন ধরনের মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ে। মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়েম উদ্দিন জানান, তালা ভেঙ্গে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। স্বামী জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ।