জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর, অস্থায়ী আবাসন শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতার দাবিতে গণ-অনশন করছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রোববার সকাল ৯টা থেকে শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে এ গণ-অনশন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেরানীগঞ্জ দ্বিতীয় ক্যম্পাসের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ, ছয় বছরে কাজের অগ্রগতি না হওয়ায় সেনাবাহিনীর হাতে কাজ হস্তান্তর করতে দীর্ঘদিন যাবৎ আন্দোলন করে আসছে শিক্ষার্থীরা। এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে তিন দাবিতে গণঅনশন শুরু করেছে ১৩ শিক্ষার্থী।
তাদের দাবিগুলো হল- এক. সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে। দুই. পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে। তিন. যতদিন অব্দি আবাসন ব্যবস্থা না হয় ততদিন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।
অনশনে বসা ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফেরদৌস শেখ বলেন, এই সরকার থাকাকালীন যদি আমরা আমাদের মৌলিক দাবি দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও আবাসন সংকট সমাধান করতে না পারি, তবে আর কখনই তা সম্ভব হবে না। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার ১৮/১৯ বছরেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য একাডেমি সুযোগ সুবিধা, আবাসন ব্যবস্থা ও শিক্ষার পরিবেশ গড়তে পারেনি। এই সরকার জনগণের সরকার, বিপ্লবীদের সরকার। আমরা আশা রাখি তারা আমাদের দাবিগুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে অতিদ্রুত বাস্তবায়ন করবে। তাই আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য, ২০ হাজার শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত আমরা অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
অনশনে বসা ছাত্র অধিকার পরিষদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি এ কে এম রাকিব বলেন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাস সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের জন্য বড় একটা আন্দোলন হল। সেখানে মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলে কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর করতে পারে। কিন্তু আমরা দেখতে পাই প্রশাসনের এ ব্যাপারে কাজের কোনো অগ্রগতি নেই। তাই আমরা গণঅনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছি।
অনশনে বসা অপর ১২ শিক্ষার্থী হলেন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রাশিদুল ইসলাম, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী সোহান প্রামাণিক, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফয়সাল মুরাদ, দর্শন বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী তাওহিদুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফেরদৌস শেখ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান তানজিল, দর্শন বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী সুজন চন্দ্র সুকুল, সমাজকর্ম বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী জুবায়ের ইসলাম রিয়ন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু মুসা, ফিন্যান্স বিভাগের ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন এবং আইন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম।