দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তালিকাভুক্ত ২৭ শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে মুক্তি পেয়েছে। জামিনে মুক্তি পাওয়া এসব সন্ত্রাসীর নাম এসেছে সাম্প্রতিক কয়েকটি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে।
নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা এই সন্ত্রাসীদের নিয়ে অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, পুরোনো সাম্রাজ্য ফিরে পেতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তারা, যেকোনো মূল্যে এদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যদিও পুলিশের দাবি, জামিনপ্রাপ্তদের সন্ত্রাসীদের রাখা হয়েছে নজরদারিতে।
গত ২ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে ককটেল বিস্ফোরণে আহত হন মিরপুরের রিও ফ্যাশন লিমিটেডের স্টোরকিপার। সিসিটিভি ফুটেজেও মিলেছে ঘটনার সত্যতা। ঝুট ব্যবসার আধিপত্য নিয়ে ঘটা এই হামলায় সেই রাতে গ্রেপ্তারও হয় একজন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মিরপুরের তৈরি পোশাক কারখানার ঝুটের নিয়ন্ত্রণ ছিল সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর রজ্জব হোসেনের হাতে। পুলিশ বলছে, ৫ আগস্টের পর ঝুট ব্যবসা নিয়ে নতুন দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
এছাড়া গত ১০ জানুয়ারি, এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের সামনে দুই ব্যবসায়ীকে কোপানোর নেপথ্যেও ছিল মার্কেট নিয়ন্ত্রণের দ্বন্দ্ব। এ ঘটনায় নাম এসেছে দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমন ও ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালের।
কারা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ৫ আগস্টের পর মুক্তি পাওয়াদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মিরপুরের কিলার আব্বাস ওরফে আব্বাস আলী, শাহাদত হোসেন, শেখ মোহাম্মদ আসলাম ওরফে সুইডেন আসলাম, মোহাম্মদপুরের ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলাল, হাজারীবাগের সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমন।
অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, অনেকগুলো অপরাধের সঙ্গে তাঁদের নাম আসায় বোঝা যাচ্ছে, নজরদারি হচ্ছে না সঠিকভাবে। আদৌ নজরদারি হয়েছে কিনা তা নিয়েও থেকে যায় সন্দেহ। এসব শীর্ষ সন্ত্রাসীদের প্রায় সকলেরই রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় আছে। রাজনৈতিক দলগুলো এমন পর্যায়ে যেতে হবে যে, তাঁরা কোনো সন্ত্রাসীদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেবে না।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, জামিন পাওয়া আসামিদের কর্মকাণ্ড আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। তাঁরা যদি কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে যায় তাহলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।
পুলিশ আরও জানায়, অপকর্ম ও আধিপত্যের লড়াই ঠেকাতে সন্ত্রাসীদের জামিন বাতিলের আবেদন করবে তারা।