সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে তাদের অবরোধ শুরু হয়। রাত ১০টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলছে।
সেই হিসেবে টানা ১০ ঘণ্টা তাদের অবরোধে গুলশান-মহাখালী সড়কে যান চলাচল বন্ধ। ফলে ব্যস্ততম এ সড়কের দুই পাশে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রয়েছে গণপরিবহন।
এদিকে, রাত ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে যান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে সরকারের একটি প্রতিনিধিদল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শিপ্রা রানী মণ্ডলসহ কলেজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
যুগ্মসচিব মো. নুরুজ্জামান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা কথা বলেন। তারপরও শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি স্থগিতে রাজি হননি। তারা তিতুমীর কলেজকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’ করার তাৎক্ষণিক ঘোষণা দেওয়ার দাবি করেন। এ ঘোষণা না দিলে তারা রাজপথ ছেড়ে যাবেন না। গণঅনশন, রাস্তা অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
তবে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে ঘোষণা করা সম্ভব নয় বলে যুগ্মসচিব শিক্ষার্থীদের জানালে তারা বলেন, তাহলে যিনি ঘোষণা করতে পারবেন, তাকে ডেকে আনতে হবে।
দীর্ঘসময় বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে যুগ্মসচিব নুরুজ্জামান বলেন, তোমাদের দাবি যে অযৌক্তিক, সেটা তো কেউ বলছেন না। কিন্তু এটি একটি প্রক্রিয়াধীন বিষয়। তোমরা ২৮ বছর ধরে আন্দোলন করছো। এটা তোমরা আদায় করেই ঘরে ফিরবা, সেটাও আমরা জানি। কিন্তু এখনই বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা দেওয়াটা তো সম্ভব নয়। পরবর্তীতে যত জায়গায় এটা নিয়ে কাজ হবে, আমি সেখানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। তোমরা আজকে রাতে ফিরে যাও।
যুগ্মসচিবের এমন বক্তব্যের পর শিক্ষার্থীরা তা মেনে না নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন। শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন, ‘হয় তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়, না হয় মৃত্যু’। এ ঘোষণা দিয়ে রাতেও তারা গণঅনশন, রাস্তা অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান।
শিক্ষার্থীরা বলেন, যুগ্মসচিব স্যার মুলা নিয়ে আন্দোলন বন্ধ করতে এসেছিলেন। এর আগেও তারা অনেকবার মুলা ঝুলিয়ে গেছেন। আর মুলা ঝুলানো প্রতিশ্রুতি আমরা মেনে নেবো না।
তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল ৫টা থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। শুরুতে পাঁচজন শিক্ষার্থী অনশনে বসেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাতে যোগ দেন আরও দুজন। আর দুপুরে তা গণ-অনশন কর্মসূচিতে পরিণত হয়।