কারাগারে বিএনপি নেতা পিন্টুর মৃত্যু, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo

রাজশাহী: কারাগারে থাকা অবস্থায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর মৃত্যুর ঘটনায় রাজশাহীর আদালতে মামলা হয়েছে। মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ২৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত মামলা গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রয়াত বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন পিন্টুর ভাই নাসিম আহমেদ রিন্টু (৫০) রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে এ মামলা করেন। তার পক্ষে আদালতে এজাহার দাখিল করেন আইনজীবী ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পূর্নবাসন বিষয়ক সহসম্পাদক শফিকুল হক মিলন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আবদুল মালেক রানা।

শেখ হাসিনা ছাড়াও মামলার আসামির তালিকায় রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ঢাকার সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, আসাদুজ্জামান কামাল, আনিসুল হক, হাজী মো. সেলিম, সোলায়মান সেলিম, ইরফান সেলিম, মনির হোসেন ওরফে কোম্পানি মনির ওরফে স্প্রিট মনির এবং এএস শরিফ উদ্দিন ওরফে ব্ল্যাক শরিফ।

এছাড়াও তৎকালীন আইজিপি, তৎকালীন আইজি প্রিজন, তৎকালীন ঢাকা ও রাজশাহীর ডিআইজি প্রিজন, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের তৎকালীন সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম, জেলার শাহাদত হোসেন, কারা চিকিৎসক আবু সায়েম, কয়েদি রাব্বানী ও বিডিআর বিদ্রোহ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবু কাহার আকন্দকে আসামি করা হয়েছে।

ছাত্রদলের সভাপতি থাকা অবস্থায় ২০০১ সালের নির্বাচনে ঢাকার লালবাগ-কামরাঙ্গীরচর চর আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নাসির উদ্দিন পিন্টু। পরে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হন। পিলখানা হত্যা মামলায় তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল। এ ছাড়া একটি অস্ত্র লুটের দায়ে তার ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করতে মনোনয়নপত্রও জমা দিয়েছিলেন। তবে আদালতে সাজা হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। নির্বাচন করতে পারেননি।

নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল পিন্টুকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। কয়েক দিন পরে তিনি অসুস্থ বোধ করলে ২৬ এপ্রিল তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর তাকে আবার কারাগারে নেওয়া হয়। পরে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে চিঠি দিয়ে কারাগারে চিকিৎসক ডাকা হয়। চিঠি পেয়ে একজন চিকিৎসক গেলেও তাকে কারাগারে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ২০১৫ সালের ৩ মে দুপুরে কারাগার থেকে পিন্টুকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ কারণে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন-২০১৩ এর ৭ (১) ধারামতে আদালতে এ মামলার আবেদন করা হয়।

নাসির উদ্দিন পিন্টুর ভাই নাসিম আহমেদ রিন্টু বলেন, ‘আমার ভাইয়ের জনপ্রিয়তা ও বিএনপির প্রতি তার অবদানকে ভয় পাচ্ছিল হাসিনা সরকার। তাই তাকে পরিকল্পিতভাবে পিলখানা মামলায় ফাঁসিয়ে সাজা দেওয়া হয়। এরপর কারাগারে নিয়ে হত্যা করা হয়।’

তিনি বলেন, গ্রেফতারের পর নির্যাতনের কারণে আমার ভাই প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তার সুচিকিৎসা নিশ্চিতে পরিবারের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছিল। হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ আই হসপিটালে নিজ খরচে তার নিয়মিত চিকিৎসা চলবে। কিন্তু হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে তাকে ঢাকায় না রেখে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ ও পরে রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর তার চিকিৎসা না করে সুপরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়।

আইনজীবী আবদুল মালেক রানা জানান, আদালত মামলা গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। আগামী ১৩ মার্চ মামলার পরবর্তী ধার্য্য তারিখ। এই সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বাংলানিউজবিডিহাব/ইএইচটি/এসআর

কারাগারে মৃত্যু
বিএনপি নেতা পিন্টুর মৃত্যু
রাজশাহী
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।