স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:৫০
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘নির্বাচন সংস্কার বিশ্লেষণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না
ঢাকা: নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ নিয়ে যে উত্তেজনা বিরাজ করছে, তা প্রশমনের প্রচেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকারকে করতে হবে। কেউ যদি উসকানি দেয়, আর আপনিও উসকান- এটা যদি প্রতি তিন মাস পরপর ঘটতে থাকে, তাহলে আগামী তিন বছরেও তো ভোট করতে পারবেন না। ভোট করতে তো একটা পরিবেশ লাগবে। আপনি জিততে চান, কিন্তু ফ্যাসিবাদের ওপর রাগ দেখিয়ে কি জিততে পারবেন? লড়াই করে, রক্ত দিয়ে যে বিজয় আমরা অর্জন করেছি- তা রক্ষা করতে হবে।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘নির্বাচন সংস্কার বিশ্লেষণ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন৷ রাষ্ট্র সংস্কার ফোরাম নামক এক সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এরশাদ শাসনামলের সাবেক প্রতিমন্ত্রী গোলাম সারোয়ার মিলন, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, আমিরুল করিম প্রমুখ।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, অনেকে দাবি করছেন যে, আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে। এর আগে ভোট হবে না। কিন্তু দেখা গেলো বিচার করতে করতে ছয় বছর লেগে গেল। তখন তো জনগণ মেনে নেবে না। তাই সবকিছু আবেগ দিয়ে, রাগ দিয়ে বিচার করলে হবে না।
একটি গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ রচনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তাহলে আওয়ামী লীগের মত ফ্যাসিবাদী একটি দল আর কোনোদিন জনগণের কাছে আসতে পারবে না। এমন একটি নির্বাচন আয়োজন করুন, যার ওপর দাঁড়িয়ে আগামী দিনের গণতন্ত্রের ভিত রচিত হয়।
সংস্কার প্রসঙ্গে মান্না বলেন, সংস্কার সর্বাংশে ভালো জিনিস। সংস্কার করার ব্যাপারে সমগ্র জাতি এখন ঐক্যবদ্ধ আছে৷ কিন্তু প্রশ্নটা হলো যে, সংস্কারটা কতখানি লাগবে। সংস্কারের প্রশ্নে কোনো বিষয়ে ন্যূনতম যে ঐকমত্য হবে, সরকার ততটুকু সংস্কার করবে।
সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নিজেদের মধ্যে ঐকমত্য বলতে কিছু নাই- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত সংস্কার প্রসঙ্গে যত আলোচনা হয়েছে, আমি একটা প্রসঙ্গে ঐকমত্য দেখতে পাচ্ছি, সেটা হল- প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমাতে হবে। এর বাইরে অন্য কোনো বিষয়ে ঐকমত্য দেখা যায়নি।
অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে মান্না বলেন, ছয় মাস পরে অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে সরকার একটা কঠিন সময়ে এসে উপনীত হয়েছে । জিনিসের দাম কমে নাই। ইনভেস্টমেন্ট বাড়েনি, ইনকাম রেট বাড়েনি। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দুর্বল।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানুষ যদি রাস্তায় নামে, এই সরকার কি তা থামাতে পারবে? কোনো একটি রাজনৈতিক দল যদি তা সমর্থন করে হরতাল ডাকে, তবে তা মোকাবিলা করার জন্য কি পুলিশ নামবে? এ রকম সরকার দিয়ে তো দীর্ঘদিন ভালো শাসন চালানো যাবে না। যখন তখন সেটা ভেঙে যেতে পারে।
বাংলানিউজবিডিহাব/ এএইচএইচ/আরএস
অন্তর্বর্তী সরকার
মাহমুদুর রহমান মান্না
শেখ হাসিনা
সংস্কার ও নির্বাচন