নির্বাচন ইস্যুতে ২ মেরুতে বিএনপি-জামায়াত

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo

নির্বাচন কমিশন। ছবি: বাংলানিউজবিডিহাব

ঢাকা: স্থানীয় সরকার, নাকি জাতীয় নির্বাচন- কোনটা আগে? বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল চায় আগে জাতীয় নির্বাচন হোক। তারা মনে করে, এই মুহূর্তে জাতীয় অগ্রাধিকার হচ্ছে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান। স্থানীয় সরকার নির্বাচন এই মুহূর্ত বাস্তবভিত্তিক সিদ্ধান্ত হতে পারে না। কিছু সংস্কার করে দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়া উচিত।

অন্যদিকে জামায়াত চায়, জাতীয় নির্বাচনের আগেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন হোক। তাদের মতে, নির্বাচন কমিশন সংস্কারের পর স্থানীয় সরকার নির্বাচনটা বেশি জরুরি। জনগণের আকাঙ্ক্ষাও নাকি এমনটাই। কোন নির্বাচন আগে হবে?- এ বিষয়ে পালটাপালটি অবস্থানে রয়েছে বিএনপি ও জামায়াত।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে এই ইস্যুটি বেশ আলোচনায় রয়েছে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন ও চার কমিশনারের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ত্রয়োদশ নির্বাচন নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনাও করেছে দল দুটি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও সংস্কারসহ নানা বিষয়ে খোলামেলা কথা বলে দলগুলোর নেতারা।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বৈঠক শেষে দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, ‘জনগণের আকাঙ্ক্ষা স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে হোক। তাই জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী জামায়াত চায় জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন।’

অন্যদিকে, এ বিষয়ের একেবারে উল্টো বক্তব্য বিএনপির। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ঢাকাস্থ ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

এমনকি বিএনপি আনুপাতিক হারে নির্বাচনের ব্যবস্থার পক্ষে নয় বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব। তবে এই নির্বাচন ব্যবস্থার পক্ষে বিএনপি না থাকলেও এ বিষয়ে সম্মতি রয়েছে জামায়াতে ইসলামীর। এর ব্যাখ্যা হিসেবে জামায়াত বলছে, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি (পিআর) চালু হলে নির্বাচন পেশী শক্তির প্রভাবমুক্ত, অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। আর এজন্যই দল হিসেবে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি (পিআর)-এর পক্ষে জামায়াতে ইসলামী।

শুধু স্থানীয় সরকার আর আনুপাতিক হারে নির্বাচনের ব্যবস্থা নিয়েই এই দুই রাজনৈতিক দল দ্বিমুখী অবস্থানে আছে- এমন নয়; সংস্কার নিয়েও রয়েছে দুই দলের দুইরকম অবস্থান। সংস্কারের আগে ভোট চায় না জামায়াতে ইসলামী। দলটি মনে করে, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন করলে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না। আর এজন্য প্রয়োজনীয় সময় দিতে প্রস্তুত জামায়াত।

তবে সংস্কারের নামে সময় ক্ষেপণ চায় না বিএনপি। তাদের দাবি, সংস্কার নির্বাচনের পরেও করা যাবে, আগেও করা যাবে। সংস্কার একবারে সম্ভব নয়। সংস্কার কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকবে। তাই সংস্কারের নামে সময় ক্ষেপণ না করে নির্বাচনের মাধ্যমে সম্মিলিতভাবে সংস্কার করতে হবে। সেইসঙ্গে সংস্কার কমিশনের কোনো প্রস্তাব যেন সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়েও নির্বাচন কমিশনের পাশে থাকবে বিএনপি।

এদিকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কমিশন প্রস্তুত রয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করেই এগোচ্ছে কমিশন। তাই অক্টোবরের মধ্যে আইন-কানুন, বিধি-বিধান সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ায় হচ্ছে।’

তবে নির্বাচনের তারিখ বা সংস্কার ইস্যুগুলোতে কমিশন তাকিয়ে আছে সরকার প্রধানের দিকে। এখন অপেক্ষার পালা কী হবে ভবিষ্যতে- আগে স্থানীয় সরকার, নাকি জাতীয় নির্বাচন?

বাংলানিউজবিডিহাব/এনএল/পিটিএম

জামায়াত
দুই মেরু
নির্বাচন
বিএনপি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।