ইউরোপের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্টের সমালোচনা

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স

মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ইউরোপের দেশগুলোর ওপর তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বাকস্বাধীনতা খর্ব, অভিবাসন নীতিতে শিথিলতা এবং প্রতিরক্ষা ব্যয়ে অবহেলার জন্য অভিযুক্ত করেছেন।

শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) জার্মানির মিউনিখে আয়োজিত সম্মেলনে ভ্যান্স বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র তার ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্বিন্যাস করবে।

ভ্যান্স ইউরোপীয় নেতাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ এবং খ্রিস্টানদের অধিকারের লঙ্ঘনের অভিযোগও তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘মানুষের মতামতকে খাটো করে দেখা, তাদের উদ্বেগ উপেক্ষা করা, গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে দমন করা গণতন্ত্র রক্ষার কোনো উপায় নয়। বরং এটি গণতন্ত্র ধ্বংসের নিশ্চিত পথ।’

ভ্যান্সের বক্তব্যের পরপরই জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বোরিস পিস্তোরিয়াস কঠোর প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, ‘যদি আমি ঠিক বুঝে থাকি, তবে তিনি ইউরোপের কিছু পরিস্থিতিকে স্বৈরাচারী শাসনের সঙ্গে তুলনা করছেন। এটি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।’

ভ্যান্স এর আগে রোমানিয়াকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগে নির্বাচন বাতিল করার জন্য নিন্দা করেন। সুইডেনের আদালত কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় এক কর্মীকে দোষী সাব্যস্ত করায় সেটিকেও ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিপন্থি বলে সমালোচনা করেন। যুক্তরাজ্যেও গর্ভপাত ক্লিনিকের বাইরে বিক্ষোভকারী এক কর্মীকে গ্রেফতার করার ঘটনায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

ভ্যান্স জার্মানির প্রধানধারার রাজনৈতিক দলগুলোর কট্টর-ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’-কে রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন রাখার নীতির বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের ভিত্তি হলো জনগণের কণ্ঠস্বরের গুরুত্ব। এখানে ফায়ারওয়াল-এর কোনো স্থান নেই।’

ভ্যান্স তার ভাষণে ইউরোপের অভিবাসন নীতির কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘এই মহাদেশে এমন কোনো ভোটার নেই, যে অবাধ ও অনিয়ন্ত্রিত অভিবাসনের জন্য ভোট দিয়েছে।’

ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সরাসরি আলোচনার চেষ্টা করছে। ট্রাম্প সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন, যা ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

ভ্যান্স মিউনিখে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ভবিষ্যতে আরও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

তিনি জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টেইনমায়ার, ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুট এবং ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তিনি ইউরোপের দেশগুলোকে প্রতিরক্ষা খরচ বাড়ানোর আহ্বান জানান।

ট্রাম্প প্রশাসন চায়, ন্যাটো সদস্য দেশগুলো তাদের জিডিপির ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করুক, যেখানে বর্তমানে বাধ্যতামূলক হার ২ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে প্রতিরক্ষায় ৩ দশমিক ৪ শতাংশ ব্যয় করছে।

ভ্যান্স বলেন, ‘ইউরোপকে প্রতিরক্ষায় আরও বেশি দায়িত্ব নিতে হবে, যাতে যুক্তরাষ্ট্র এশিয়ার দিকে মনোযোগ দিতে পারে।’

বাংলানিউজবিডিহাব/এনজে

ইউরোপ
ভাইস প্রেসিডেন্ট
যুক্তরাষ্ট্র

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।