
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে রেললাইনের পাশ থেকে ভরত চন্দ্র রায় (৫০) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার হাত বাঁধা ও মাথা কাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর-ফুলবাড়ী রেলওয়ের হলিদবাড়ী রেলগেট এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত ভরত চন্দ্র উপজেলার চণ্ডিপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর কুমারপাড়া গ্রামের মৃত সন্তোষ চন্দ্র রায়ের ছেলে। তার দুই হাত প্লাস্টিকের রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। তিনি চণ্ডিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
ধারণা করা হচ্ছে, তাকে হাত বেঁধে রেলওয়ে লাইনের ওপর ফেলে রাখা হয়েছিল। পরে রাতের কোনও ট্রেন তার ওপর দিয়ে চলে যাওয়ায় মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
এ ঘটনায় দিনাজপুর সিআইডি এএসপি ফারুক আহম্মেদ, এএসপি সার্কেল জিন্নাহ আল মামুন, ডিবি ওসি সোহেল রানা, রেল থানা ওসি ফকরুল ইসলাম ও মডেল থানার ওসি আব্দুস সালাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত ভরত চন্দ্র পার্বতীপুর রেলওয়ের খালাসি পদে চুক্তিভিত্তিক নিযুক্ত ছিলেন। সোমবার বেলা ১১টার পর তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন। সন্ধ্যার পর থেকেই তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে পার্বতীপুর উপজেলার হলদিবাড়ী রেলওয়ে গেটসংলগ্ন ৩৭৬/৮ নম্বর রেলঘুন্টি এলাকায় তার মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে মাথা বিচ্ছিন্ন ও হাতে প্লাস্টিকের রশি দিয়ে বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ দুপুরের দিকে নিহতের পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
নিহতের ছোট ছেলে রিপন চন্দ্র বলেন, আমার বাবা রেলওয়েতে খালাসি পদে চুক্তিভিত্তিক চাকরি করতেন। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। সোমবার সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর আর ফিরে আসেননি। সন্ধ্যার পর বাড়িতে না আসায় তার মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। সকালে মরদেহ উদ্ধারের সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করি। তিনি আরও জানান, সোমবার তার বাবার দেড় লাখ টাকা বকেয়া বেতন পাওয়ার কথা ছিল। ওই টাকা দিয়ে চাচাতো বোনের বিয়ের জন্য মোটরসাইকেল কিনতে যাওয়ার কথা।
ভরত চন্দ্রের স্ত্রী ভারতী বাণী জানান, তার স্বামীর কারও সঙ্গে শত্রুতা নেই। কেন তাকে হত্যা করা হয়েছে তা বুঝতে পারছেন না। দেবরের এতিম মেয়ের বিয়ের জন্য মোটরসাইকেল কিনতে যাওয়ার কথা। কিন্তু এখন সব চুরমার।
পুলিশের ধারণা, দুর্বৃত্তরা তাকে মেরে রেলওয়ে লাইনের ওপর ফেলে যাওয়ার পর মাথা বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
পার্বতীপুর রেলওয়ে থানার ওসি ফখরুল ইসলাম জানান, রেলওয়ে লাইনে ট্রেনে কাটা পড়া অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার দুই হাত প্লাস্টিকের রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে মরদেহ উদ্ধার করে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক বিষয় কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট কাজ করছে।