২৮ ফেব্রুয়া‌রি পর্যন্ত কুয়েটের একাডে‌মিক কার্যক্রম স্থ‌গিত

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo

খুলনা: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) একাডে‌মিক কার্যক্রম ২৮ ফেব্রুয়া‌রি পর্যন্ত স্থ‌গিত করা হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ৯৩তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাছুদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আনিছুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সভায় কুয়েট শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার, বহিরাগতের বিরুদ্ধে মামলা, আহতদের চিকিৎসা খরচসহ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করাসহ পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এদিকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত পুরোপুরি থমথমে অবস্থা ছিল কুয়েটে। এদিন দুপুর ১২টায় খুলনার শিববাড়ি মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ছাত্রদল। এরপর খুলনা প্রেসক্লাবে ছাত্রদলের জরুরি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাঁধে। পরে খুলনা মহানগরের রেলিগেট, তেলিগাতিসহ আশপাশের বিএনপি নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের সঙ্গে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেয়। এতে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে আহতদের বেশিরভাগকেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। তাদের কুয়েট মেডিকেল সেন্টারসহ আশপাশের বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে কুয়েটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র হলগুলো প্রদক্ষিণ করে। পরে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে গিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেয় শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয় এবং ক্যাম্পাসের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে কুয়েট পকেট গেটের বাইরে বিএনপি সমর্থিত বহিরাগতরা একজন ছাত্রকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ক্যাম্পাসের ভেতর ফেলে দেয়। এরপর থেকে সাধারণ ছাত্রদের ভেতর চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। সংঘর্ষের সময় অনেকের হাতে রামদা ও দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে। সংঘর্ষে প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী আহত হন।

অপরদিকে কুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাত ৯টায় শিববাড়ি মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে জাতীয় নাগরিক কমিটি, খুলনা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, খুলনা মহানগর ও জেলা কমিটি। একইস্থানে অবস্থান নেয় বিএনপির নেতারাও। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

ক্লাশ-পরীক্ষা বন্ধ আছে কুয়েটে।

ওই রাতে বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানানো হয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ক্যাম্পাসের বাইরে ছাত্রদলের সদস্য ফরম বিতরণকালে ছাত্রশিবিরের হামলায় ছাত্রদলের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে খুলনা বিএনপি নেতারা।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ছাত্রশিবির খুলনাকে উত্তপ্ত করার জন্য ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের অতর্কিত হামলা চালিয়ে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের মারাত্মক আহত করেছে। ছাত্রশিবির নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার না করে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যানারে তারা নগরীতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে- যা মোটেই সর্মথনযোগ্য নয়। ছাত্রশিবির শান্তিপূর্ণ খুলনাকে অশান্ত করতে চায়। অবিলম্বে হামলাকারী শিবির ক্যাডারদের গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায় যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রশাসন দায়ী থাকবে।

অপরদিকে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ব্যর্থতার দায় স্বীকার এবং নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবিতে আল্টিমেটাম দেয় শিক্ষার্থীরা।

বাংলানিউজবিডিহাব/এসডব্লিউ

একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট)

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।