আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:২৮ | আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:৪৫
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ‘স্বৈরশাসক’ বলে অভিহিত করেছেন। এই মন্তব্যের ফলে দুই নেতার মধ্যে চলমান টানাপোড়েন আরও বেড়েছে।
ফ্লোরিডার এক সৌদি-সমর্থিত বিনিয়োগ সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘জেলেনস্কির একমাত্র দক্ষতা ছিল জো বাইডেনকে বোকা বানানো।’
ট্রাম্পের এই মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইউরোপীয় নেতারা। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেছেন, ‘জেলেনস্কির গণতান্ত্রিক বৈধতাকে অস্বীকার করা ভুল এবং বিপজ্জনক।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টার্মারও জেলেনস্কির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। ডাউনিং স্ট্রিটের এক মুখপাত্র বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির কারণে নির্বাচন স্থগিত রাখা যৌক্তিক, যেমনটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাজ্য করেছিল।’
ইউক্রেনে ২০২৪ সালের মে মাসে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও, ২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ হামলার পর থেকে দেশটি সামরিক আইনের অধীনে রয়েছে, যার ফলে নির্বাচন স্থগিত রয়েছে।
ট্রাম্পের ‘স্বৈরশাসক’ মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন এবং জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক। বেয়ারবক বলেন, ‘যদি বাস্তব পরিস্থিতি দেখা হয়, তাহলে বোঝা যাবে ইউরোপে কারা প্রকৃত স্বৈরশাসনের শিকার রাশিয়া ও বেলারুশের জনগণ।’
ট্রাম্প দাবি করেছেন, ইউক্রেনে জনপ্রিয়তা কমেছে জেলেনস্কির। তবে বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, ৫৭ শতাংশ ইউক্রেনীয় নাগরিক তাদের প্রেসিডেন্টের ওপর আস্থা রাখেন।
ট্রাম্প আরও অভিযোগ করেন, ইউক্রেন তার সঙ্গে দুর্লভ খনিজ সম্পদ নিয়ে করা চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। তবে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ইউক্রেন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা না পেলে এই সম্পদ অন্য কারও হাতে যেতে দেবে না।
নিজের সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প দাবি করেন, ইউক্রেন যুদ্ধ ইউরোপের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নয়। এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে চান।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে রাশিয়ার অ্যালুমিনিয়াম শিল্প, অবৈধভাবে তেল পরিবহনকারী জাহাজ এবং বেশ কয়েকটি রুশ ব্যাংককে বৈশ্বিক সুইফট পেমেন্ট সিস্টেম থেকে বিচ্ছিন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এই বিতর্কের মধ্যে জেলেনস্কি বলেন, ‘বিশ্বের সামনে এখন দুটি পথ পুতিনের সঙ্গে থাকা বা শান্তির পক্ষে থাকা।’
বাংলানিউজবিডিহাব/এনজে