আলোর প্রতিফলন কাকে বলে: আলোকরশ্মি যখন এক মাধ্যম দিয়ে চলতে চলতে অন্য এক মাধ্যমের কোনো তলে আপতিত হয় তখন দুই মাধ্যমের বিভেদতল হতে কিছু পরিমাপ আলো আবার প্রথম মাধ্যমে ফিরে আসে। এ ঘটনাকে আলোর প্রতিফলন বলে।
অন্যভাবে: কোনো সমসত্ত্ব স্বচ্ছ মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় আলোকরশ্মি অপর একটি মাধ্যমের বিভেদতলে আপতিত হলে , ওই আপতিত রশ্মির কিছু অংশ দ্বিতীয় মাধ্যমের তল থেকে দিক পরিবর্তন করে পুনরায় প্রথম মাধ্যমে ফিরে আসে । আলোকরশ্মির দিক পরিবর্তনের এই ঘটনাকে আলোর প্রতিফলন বলে ।
যে বিভেদ তল থেকে আলো ফিরে আসে তাকে প্রতিফলক তল বা প্রতিফলক পৃষ্ঠ বলে। আর পূর্ববর্তী মাধ্যমে ফিরে আসা আলোকে বলা হয় প্রতিফলিত রশ্মি বা আলো।
সাধারণতঃ দুই মাধ্যমের বিভেদ তলে যে পরিমাণ আলো এসে পড়ে সবসময় তা সম্পূর্ণ প্রতিফলিত হয় না। পতিত আলোর কতটুকু প্রতিফলিত হবে তা দুটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। তা হলো – ১) মাধ্যম দুটির প্রকৃতি এবং ২) আপতিত আলো প্রতিফলক তলের উপর কত কোণে আপতিত হয় তার পরিমাণ।
প্রতিফলন তলের মসৃণতা অনুযায়ী প্রতিফলকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথাঃ
- নিয়মিত প্রতিফলন
- অনিয়মিত বা ব্যাপ্ত প্রতিফলন।
আলোর প্রতিফলনের ব্যাখ্যা
মনে করি , AB একটি সমতল দর্পণ ।
PO আপতিত রশ্মি এবং OQ প্রতিফলিত রশ্মি ।
O আপতন বিন্দু ।
ON আপতন বিন্দুতে দর্পণের ওপর অঙ্কিত অভিলম্ব ।
∠PON = আপতন কোণ ।
∠QON = প্রতিফলন কোণ ।
আপতিত রশ্মি কাকে বলে
আলোকরশ্মি যে পথে এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমের বিভেদতলে আপতিত হয় , সেই পথকে আপতিত রশ্মি বলে ।
প্রতিফলিত রশ্মি কাকে বলে
আলোকরশ্মি দুই মাধ্যমের বিভেদতল থেকে প্রতিফলিত হয়ে যে পথে প্রথম মাধ্যমে ফিরে যায় , সেই পথকে প্রতিফলিত রশ্মি বলে ।
আপতন বিন্দু কাকে বলে
আলোকরশ্মি দুই মাধ্যমের বিভেদতলের ওপর যে বিন্দুতে আপতিত হয় , সেই বিন্দুকে আপতন বিন্দু বলে ।
অভিলম্ব কাকে বলে
আলোকরশ্মি প্রতিফলক তলের ওপর আপতিত হলে , আপতন বিন্দুতে প্রতিফলক তলের ওপর অঙ্কিত লম্বকে অভিলম্ব বলে ।
আপতন কোণ কাকে বলে
আপতিত রশ্মি অভিলম্বের সঙ্গে যে কোণ উৎপন্ন করে , তাকে আপতন কোণ বলে ।
প্রতিফলন কোণ কাকে বলে
প্রতিফলিত রশ্মি অভিলম্বের সঙ্গে যে কোণ উৎপন্ন করে , তাকে প্রতিফলন কোণ বলে ।
প্রতিফলিত আলোর পরিমাণ
প্রতিফলিত আলোর পরিমাণ নির্ভর করে – 1. মাধ্যম দুটির প্রকৃতির ওপর এবং 2. আপতিত আলো প্রতিফলক তলের ওপর যে কোণে আপতিত হয় , তার ওপর ।