
মরক্কোতে বাংলাদেশের সদ্যবিদায়ী রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হারুন আল রশিদকে দেশে ফিরে আসা ও অনতিবিলম্বে মন্ত্রণালয়ে যোগদানের আদেশ দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে, নির্দিষ্ট সময়ে ফিরে আসার পরিবর্তে অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট করেন ওই কর্মকর্তা। এ অভিযোগে তার এবং তার পরিবারের পাসপোর্ট বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ মরক্কোতে বাংলাদেশের সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হারুন আল রশিদকে দেশে প্রত্যাবর্তন ও অনতিবিলম্বে মন্ত্রণালয়ে যোগদানের জন্য আদেশ দেওয়া হয়েছিল। এ সত্ত্বেও তিনি তার পদে বহাল থেকে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ দায়িত্ব ত্যাগ করেন। বাংলাদেশে ফিরে আসার পরিবর্তে, তিনি বিভিন্ন অজুহাতে তার যাত্রা বিলম্বিত করেন। মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমোদন ছাড়াই তিনি মরক্কোর রাবাত থেকে কানাডার অটোয়ায় চলে গেছেন বলে জানা গেছে। গত ৬ মার্চ তার অটোয়া থেকে ঢাকায় ফিরে আসার কথা থাকলেও তিনি ফেরত আসেননি।’
ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ হারুন ‘A Plea for Bangladesh-and for Myself Subject: Bangladesh’s Descent into Anarchy under Yunus-The World’s Silence is painful’ শীর্ষক একটি লেখা তাঁর ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। যেখানে তিনি পূর্ববর্তী নিপীড়ক ফ্যাসিবাদী সরকারের গুণকীর্তনের পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে পরিস্থিতি ক্রমশ নৈরাজ্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে চিত্রিত করার অপচেষ্টা করেছেন। তাঁর পোস্টে হারুন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ ও প্রচেষ্টাসহ বাংলাদেশের সামগ্রিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা করেছেন।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বর্তমান বাংলাদেশে বিরাজমান পরিস্থিতি এবং বাস্তবতাকে সম্পূর্ণরূপে বিকৃত উপস্থাপন করে ফেসবুকে এধরনের লেখা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য এবং এর বিষয়বস্তু গভীরভাবে উদ্বেগজনক। এরূপ রচনা লেখকের গোপন উদ্দেশ্য বা অসৎ অভিসন্ধির ইঙ্গিত দেয়।’
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করে মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পরিবর্তে তিনি কানাডায় চলে যান এবং সেখান থেকে ফেসবুকে লেখালেখি শুরু করেন। তিনি তার ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে নিজেকে ‘নির্যাতিত কূটনীতিক’, ‘নির্বাসিত ঔপন্যাসিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যা মূলত বিদেশে সহানুভূতি অর্জনের অভিপ্রায়ে করা হয়েছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে তার এবং তার পরিবারের পাসপোর্ট বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। মন্ত্রণালয় মোহাম্মদ হারুন আল রশিদের এহেন কর্মকাণ্ডের জন্য প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, মন্ত্রণালয় তার কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারীর এ ধরনের কর্মকাণ্ড কোনোভাবে প্রশয় দেয় না এবং ভবিষ্যতেও যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।