
উৎসমূল ও অস্তিত্ব
সার্বভৌমের হৃদপিণ্ডে রক্ত সঞ্চালন
চেতনে খুঁজি পূর্বপুরুষের কঙ্কাল
রক্তের বহমান ধারায়।
বাংলাদেশ, কার রক্তে সঞ্চালিত তুমি?
দেহাবশেষে জমাট এ মাটি,
পূর্বপুরুষের আত্মহুতিতে;
অস্তিত্বের উপস্থিতি, চৈতন্যের হুল ফুটায় নীরবে।
মস্তিষ্ক হাঁটে ইতিহাসের পাতায় পাতায়,
রক্তের স্রোতধারার খোঁজে;
পাতাগুলোয় রক্তের সাংকেতিক ভাষা,
হাজারো বছরের পুরোনো।
বদ্বীপের বহমান রক্তের উৎস
ধমনী, শিরা-উপশিরায় ওঠানামা করে;
রক্তনদীর উৎসমূল…
কোথায় সেই হিমালয়?
অস্তিত্বের মস্তিষ্ক হেঁটে পৌঁছে যায় হিমালয়ে
সার্বভৌমের হিমালয় ধানমন্ডির বত্রিশে;
সেই সিড়ির রক্তের স্রোতধারা
অনবরত নামছে রবীন্দ্র সরোবরে।
কবিগুরুর বুকে সঞ্চালিত রক্ত কার?
বত্রিশের হিমালয় থেকে আসা
লোহিত নদীর লালস্রোত,
রবি ঠাকুরের বুকে নামছে।
বঙ্গবন্ধুর জমাটবদ্ধ রক্তিম বুক, রক্ত সরবরাহের হিমালয়;
অনবরত ঝরছে…
নীরবে বইছে সার্বভৌমের শিরা-উপশিরায়।
সার্বভৌমের হিমোগ্লোবিন (শোকগাথা)
কষ্টের চাকায় আবার মোচড়,
কী করে স্মৃতির মলাট অস্পষ্ট হবে,
বিস্মৃতির নোঙরে?
হৃদয়ের দগ্ধতার পোড়া ক্ষতে,
কালো রাতটি আসে লবনের প্রলেপ নিয়ে,
কী করে অশুভ রাতটির আত্মাগুলি খুন করা যায়,
রাতদিনের নিরবধি স্রোতের গতি ঘুরিয়ে?
ক্ষতগুলির চিৎকার শোনা যায় নীরবে, হৃদয়ের কোহরে।
যন্ত্রণার জাহাজের গোঙানোর গতি, বাড়ে নিরবধি,
‘জাতির কালজয়ী কণ্ঠস্বরে’ অশুভ মন্ত্রের বাণ,
আর শোনা যাবেনা কখনোই।
হৃদয়ের কষ্টের কম্পনগুলি, করে শুধু লুকোচুরি।
করুণ সুরের দুঃখোগুলির নৈশব্দিক রোদনে,
জমাট বাঁধা পাথর বহি হৃদয়ে,
আজও কাতরানো স্বর শূন্যতায় ভাসে, বাঁচার আকুতি নিয়ে:
‘শিশিরের ফোঁটার মতো দু’ফোটা পানি যদি দাও কম্পিত ঠোঁটে’
বাতাসের চুম্বনে ঘুমিয়ে গেল অবুঝ শিশুটি,
বুলেটের সরু বীজটি, বিঁধে দিল নিষ্পাপ বুকটি।
বুকের ক্ষুব্ধ ব্যথার বিদ্রোহ জেগেছে, নতুন দ্রোহে।
বেদনার হাড়ে শোকের মাতম, বৈদগ্ধের ভুনা ব্যথাগুলি,
শূন্যতার শহরে, বাতাসে প্রাণ ঝাপটায়, ভূমিষ্ঠের অপেক্ষার শিশুটি-
‘জনকের জননে, আছি লুকিয়ে, হত্যার খরগ দাও ছুড়ে;
পিতৃত্বের প্রতিজ্ঞার আকাঙ্ক্ষা, দেখব বঙ্গে দ্রুত ভূপতিত হয়ে।’
তিমির প্রকোষ্ঠের ভিতরে নড়েচড়ে থাকা শিশুটি,
আলোর ভুবনে হাতছানি দেয়নি কখনোই;
হে প্রকৃতি, হে নিয়ন্তা, তোমার এ’কি দূরভিসন্ধি?
বিষণ্ণতার বলয়ে উঁকি মারে ভাবনার রগগুলি।
দগদগে ক্ষতগুলোর ঘাঁ, দ্রুত ছড়ায় অভ্যন্তরীণ প্লেটে,
বুলেটের তৃষ্ণার্ত ঠোঁকরে, দেহের তাজা লাল হিমোগ্লোবিন,
চেটে চেটে খায়, মেহেদিরাঙা হাতের কারুকার্যে বোনা,
সুখের কপোত-কপোতির রঙিন স্বপ্নগুলোর আয়ুকে।
বেদনাতুর বিরহ বিষাক্ত খোঁচা মারে উপলব্ধি লহরে।
মাতৃদুগ্ধের ঋণ, ফোঁটা ফোঁটা হয়ে ঝরে কষ্টের অশ্রুগুলি,
‘মায়ে’র জীবন বিলিয়ে, সন্তানদের জীবন ভিক্ষার ফিরিস্তি:
‘সব বুলেটের বিষাক্ত ফলগুলি, চালান করো, বক্ষ যে মোর খালি,
বাকি যার যার জীবন, তার তার হাতে দাও ফিরি।’
‘মা ও তাঁর পাখিদের’ প্রাণপাখি নিলো কেড়ে,
বুলেটের ওয়াদা ভেঙে, বিশ্বাসঘাতকতার কালো ঢংগে।
সেই রাতের রক্তের বহমান স্রোতোধারা,
এখোনো বয়ে চলে সার্বভৌমের শিরা-উপশিরায়,
বেঁচে আছে তাঁদের লাল রক্তে, আমার বাংলাদেশ।
Elegiacs on Fifteen August (An Elegy)
My heart is aching again
Can I ever recollect
What actually happened?
My heart’s pains accelerate its rates
When the Night falls again,
Could I efface the monstrous night
From the gyratory orbital cycle?
My lonesome heart is aching again.
My heart accelerates its agonising rates
When the Voice of the People stopped,
And it will be never heard hence.
My broody heart is aching again.
My heart accelerates its tormenting rates
When I hear a voice in the ether.
The trembling voice pleads :
‘Water, water, a dosage of water’,
The moaning voice mingled in the air,
As the bullets pierced the innocent.
My dreay heart is aching again.
My heart accelerates its groaning rates
When I hear a scream from the womb:
‘Never slay my mother
I want to see my father’.
The womb’s baby will never see the light,
O’ my dear Heaven! O’ my dear Chieftain!
My gloomy heart is aching again.
My heart’s groanings accelerate its rate
When bullets reddened the bride’s coloured hands
With the fresh blood of her own veins.
My melancholic heart is aching again.
My heart’s agonies accelerate its pace
When the Mother pleaded in vain:
‘Pierce me with your all bullets
Let the others go with their fuels.’
The bullets pierced the Mother’s chest
Along with her dearest jewels.
Drops of blood spilling out at that Night
Now flowing through the veins of the sovereign terrain.
The Sovereign Bangladesh, it remains.